নিজস্ব প্রতিনিধি: চিনকে রীতিমতো চাপে ফেলে দিল ভারত। অগ্নি-৫ মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণের মাধ্যমে চিনের পাশাপাশি একাধিক দেশকে এবার আরও ভাল করে নিশানায় নিয়ে আসতে পারল নয়াদিল্লি। লাদাখের গালওয়ান কাণ্ডের কথা সকলেই জানেন। ভারত ও চিনের সেনারা সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে দু’পক্ষেরই বেশ কয়েকজন সেনার মৃত্যু হয়েছিল। এরপর দু’দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বহু বৈঠকের পরেও পাকাপাকি সমাধান সূত্র বের হয়ে আসেনি। সীমান্তে লালফৌজের উস্কানি অব্যাহত থেকেছে। এই পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগেই অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়ের ভারত-চিন সীমান্তে ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। পাঁচশোর বেশি চিনের সেনা সীমান্ত পার করে ভারতীয় ভূ-খণ্ডে ঢুকে পড়লে তার পাল্টা প্রতিরোধ করেন ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। ভারতীয় সেনার তাড়া খেয়ে তখন তারা কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না। একটা সময় চিনের সেনা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এভাবেই সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ঠিক সেই সময় ভারত অগ্নি-৫ মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করল। স্বাভাবিকভাবেই তাতে চাপে পড়ে গেল চিন।
কী বিশেষত্ব রয়েছে অগ্নি-৫ মিসাইলের? প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে এর পাল্লা ৫৪০০ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার রাতের আকাশে পরীক্ষামূলক ভাবে এটির সফল উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। রাতের আকাশ নীল আলোয় ভরে যায়। এমনকী কলকাতা থেকেও সেই আলো দেখা গিয়েছে বলে অনেকেই জানিয়েছেন। এই মিসাইল প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম। অর্থাৎ এই পাল্লার মধ্যেই পড়ছে বেজিং। এখানেই শেষ নয়, অগ্নি-৫ মিসাইলের সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ হল এটি পরমাণু অস্ত্র বহন করতে সক্ষম। যা চিনের পাশাপাশি চাপে ফেলে দিয়েছে পাকিস্তান-সহ অন্যান্য দেশকেও। অরুণাচল প্রদেশের ঘটনার পরই এই মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
ওড়িশার চাঁদিপুর থেকে এই মিসাইল উৎক্ষেপণের পরেই বিজ্ঞানীরা যথেষ্ট স্বস্তি পেয়েছেন বলে খবর। এর আগে কোনও দিন রাতে এমন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়নি। সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্নি-৫ এর পাশাপাশি অগ্নি-৬ এর মতো আরও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। সেক্ষেত্রে অগ্নি-৬ মিসাইল তৈরি সম্পন্ন হলে তার পাল্লা সর্বাধিক দশ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলেও একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে চিনকে চাপে রাখার জন্য ভারতের ব্লু-প্রিন্ট যে পুরোপুরি তৈরি, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। উল্লেখ্য বিভিন্ন সময়ে নয়াদিল্লি একটা কথা বারবার স্পষ্ট করেছে যে, ভারত শান্তিপ্রিয় দেশ। ভারত কোথাও অশান্তি বাধাতে চায় না। কিন্তু তাতে ভারতকে দুর্বল ভাবলে ভুল হবে। কিন্তু কেউ যদি ভারতে গোলমাল পাকাতে আসে তখন তাদের যে ছেড়ে কথা বলা হবে না, সেই কড়া বার্তা বারবার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা। এই আবহের মধ্যে অগ্নি-৫ মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করে শত্রু দেশগুলিকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল ভারত।