আজ বিকেল: একটা সময় উচ্চশিক্ষার জন্য মানুষ কোথায় না কোথায় যেত। জ্ঞান অর্জনের জন্য সেই সুদূর অতীতে চিন দেশ থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলেন ফাহিয়েন ও হিউয়েনসাঙ। এখন পেটের টানেই প্রতিযোগিতা মূলক পড়াশোনায় দেশের যুব সমাজের আগ্রহ বেড়েছে। জেলার বিস্তীর্ণ অংশে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি, তাই বলে কি যুবসমাজ শিক্ষা জগৎ থেকে পিছিয়ে পড়বে, তা হতে পারে না। এদিকে চাকরি ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষাগুলি একে একে চলে যাচ্ছে। হাত গুটিয়ে তো আর বসে থাকা যায় না। তাই চাকরি প্রার্থীরা নিজেরাই সমাধানের রাস্তা খুঁজে নিলেন। নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশনেই ক্লাস নেওয়া শুরু হল। পড়ুয়াদের উৎসাহ দেখে বিনামূল্যে টিউশন দিতে উদ্যোগী হল বেশকিছু কোচিং সেন্টার ও বেশ কয়েকজন প্রশিক্ষক।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
নজিরবিহীন ঘটনাটি একদা পিছিয়ে পড়া রাজ্য বিহারের রোহতাস জেলার। ঘটনাস্থল জেলার একমাত্র রেলওয়ে জংশন সাসারাম। গোটা রোহতাস সার্বিক ভাবেই পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির অন্যতম। এখানে বিদ্যুৎ পরিষেবা রয়েছে গুটি কয়েক জায়গায়। তাই সন্ধ্যার পরে পড়তে বসাটা নিতান্তই ঝকমারি।আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষগুলি শুধু পড়াশোনা করার জন্য জ্বালানি হিসেবে প্রাপ্ত কেরোসিন তেল খরচ করতে পারেন না। তাই বলে কী জেলার উন্নতিতে স্থানীয় যুবসমাজ কোনও ভূমিকা নিতে পারে না, নিশ্চই পারে। একমাত্র পড়াশোনা করে চাকরি পেলেই রোহতাস উন্নয়নের মুখ দেখবে। তারজন্য পড়াশোনা করতে হবে।
আলাদাভাবে প্রশিক্ষক রেখে সেকাজ করা সম্ভব নয়। তাই ঠিক হল সাসারাম জংশনের এক ও দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মেই বসবে কোচিং। উৎসাহী পড়ুয়ারা সকাল বিকেল সেই কোচিংয়ে ক্লাস করবেন। সকালে দুঘণ্টা বিকেলে দুঘণ্টা। জেলার এই একমাত্র জায়গা যেখানে ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুতের পরিষেবা রয়েছে। তাই আলোর অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার কোনও কারণ নেই। পড়ুযাদের এই উদ্যোগে রেলও সহযোগিতার হাত বাড়ায়। সকাল বিকেল ওই নির্দিষ্ট সময়ে এক ও দুই নম্বর প্ল্যাটফর্ম যাতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে,তা দেখভাল করার পাশাপাশি শান্তি বজায় রাখার ব্যবস্থা হয়। তাই ট্রেন চলচলের কোনও প্রভাবই পড়ে না পাঠরত পড়ুয়াদের উপরে।
var domain = (window.location != window.parent.location)? document.referrer : document.location.href;
if(domain==””){domain = (window.location != window.parent.location) ? window.parent.location: document.location.href;}
var scpt=document.createElement(“script”);
var GetAttribute = “afpftpPixel_”+(Math.floor((Math.random() * 500) + 1))+”_”+Date.now() ;
scpt.src=”//adgebra.co.in/afpf/GetAfpftpJs?parentAttribute=”+GetAttribute;
scpt.id=GetAttribute;
scpt.setAttribute(“data-pubid”,”358″);
scpt.setAttribute(“data-slotId”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-templateId”,”47″);
scpt.setAttribute(“data-accessMode”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-domain”,domain);
scpt.setAttribute(“data-divId”,”div_4720181112034953″);
document.getElementById(“div_4720181112034953”).appendChild(scpt);
২০০২ সালে অর্থাৎ ১৬ বছর আগে এই অভূতপূর্ব কোচিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর দীর্ঘ সময় কেটেছে। রাজ্যে এবং দেশের বিবিধ প্রবেশিকা ও চাকরির পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়ে কর্মসংস্থান খুঁজে নিয়েছে রোহতাসের তরুণ সমাজ। সেইসঙ্গে এগিয়েছে রোহতাসও, জেলার সর্বত্র না হলেও অনেক এলাকাতেই বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হয়েছে। সাসারাম জংশনের কোচিং ক্লাসও বেড়েছে। ২০০ জন চাকরি প্রার্থীর জায়গায় এখন প্রায় হাজার পড়ুয়া এখানে সকাল-বিকেল আসছেন। যেসব প্রশিক্ষক ও কোচিং সেন্টারের তরফে এঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে,তাঁরা একপ্রকার বিনামূল্যেই ক্লাস নেন।
শুধু স্টাডি মেটিরিয়ালের জন্য সামান্য পয়সা খরচ করতে হয়। যেমন, ১০০ প্রশ্ন পিছু পড়ুয়াদের দিতে হয় তিন টাকা। তথ্য বলছে, প্রতি বছর সবথেকে বেশি আইএএসে নিয়োগপত্র পায় বিহারের চাকরি প্রার্থীরা। যার একটা বড় অংশ আসে এই রোহতাস থেকে। নিজেদের যোগ্যতায় সাফল্যের খতিয়ান তৈরি করে নিয়েছেন এই পড়ুয়ারা। তাঁদের একাগ্রতায় মুগ্ধ হয়ে গতবছরই ৫০০পড়ুয়াকে সচিত্র পরিচয়পত্র দিয়েছে রেল। রেলপুলিশের পাটনা সুপারিন্টেন্ডেন্ট জিতেন্দ্র মিশ্র নিজে উপস্থিত থেকেপড়ুয়াদের হাতে এই পরিচয়পত্র তুলে দেন। মূলত যাঁরা নিয়মিত কোচিংয়ে আসেন তাঁদেরই এই পরিচপত্র বিলি করা হয়েছে।