নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরে দেশের দশটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। ইতিমধ্যেই নাগাল্যান্ড, মেঘালয় এবং ত্রিপুরা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতিতে বছরের শুরুতেই দেশের যুবসমাজকে প্রচুর চাকরি উপহার দিল কেন্দ্র। গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে শুরু হয়েছিল ‘রোজগার মেলা’। নিয়োগ পত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল চাকরিপ্রার্থীদের হাতে। শুক্রবার বছরের প্রথম ‘রোজগার মেলা’য় ৭১ হাজারের বেশি বেকার যুবক-যুবতীর হাতে ফের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন প্রধানমন্ত্রী নাগরিক সমাজকে বিশেষ বার্তা দিয়ে বলেন, “নাগরিকরা সবসময়ই ঠিক, প্রশাসনকে এই মন্ত্র নিয়েই কাজ করে যেতে হবে৷”
তাঁর দাবি গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ হয়েছে। সেই সঙ্গে যুব সমাজকে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, সরকারি চাকরি না পেলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, তা কিন্তু নয়। সকলে যাতে নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে বাড়তি নজর দেন সেই কথা বলেছেন মোদি। যদিও কংগ্রেসের কটাক্ষ, “৩০ লক্ষ সরকারি পদ খালি রয়েছে। সেখানে মাত্র ৭১ হাজার বেকারকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে?” এর পাশাপাশি কংগ্রেস অভিযোগ করে আরও জানিয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার সময় বলেছিলেন প্রতি বছরে ২ কোটি করে চাকরি দেবেন। আট বছরের বেশি তিনি ক্ষমতায় আছেন। সেক্ষেত্রে ১৬ কোটি চাকরির কী হল?” যদিও কেন্দ্রের দাবি কর্মসংস্থানকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বর্তমান সরকার। এর ফলে দেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে।
যদিও বিরোধীদের দাবি কেন্দ্র যদি সত্যিই যুবসমাজকে আরও বেশি করে চাকরি দিতে চাইত তাহলে ভোটের মুখে এমনটা করতে হতো না। তাদের দাবি যেহেতু চলতি বছরে দশটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটের পাশাপাশি আগামী বছর রয়েছে লোকসভা নির্বাচন, তাই কেন্দ্র ‘রোজগার মেলা’র মাধ্যমে চাকরি দিয়ে মানুষের মন জয় করতে চাইছে। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হল প্রতি বছরে ২ কোটি করে চাকরি প্রদান। কিন্তু তথ্য বলছে সেই লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছে পৌঁছতে পারেনি নরেন্দ্র মোদি সরকার। যে বিষয়টি নিয়ে বহুদিন ধরেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল কেন্দ্র। তাই নতুন বছরের শুরুতেই রোজগার মেলা থেকে ৭০ হাজার চাকরি দিয়ে বিরোধীদের কিছুটা হলেও জবাব কেন্দ্র দিল বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। পরপর দু’বার অর্থাৎ দশ বছর ক্ষমতায় থাকার পর আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে বিজেপিকে, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা হাওয়া উঠবে বলেই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। তাই এখন থেকেই সে ব্যাপারে অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাই যত বেশি সম্ভব যুব সমাজের হাতে চাকরি তুলে দিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী, সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই চলতি বছরে আরও রোজগার মেলার মাধ্যমে বেকাররা চাকরি পাবেন এটাই বলতে শোনা যাচ্ছে মোদিকে। ভোট বড় বলাই। আর সে কারণেই কেন্দ্রকে এমন প্রয়াস যে চালিয়ে যেতে হবে তা স্পষ্ট।