কলকাতা: চারদিকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। জেলে রয়েছেন নেতা-মন্ত্রীরা। আর তারই মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস রাজ্যে চাকরির দাবিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন শ’য়ে শ’য়ে চাকরিপ্রার্থী। রাজ্যবাসী জানেন নিয়োগের ক্ষেত্রে কতটা সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু এই দুর্নীতির শেষ কোথায় তা জানা নেই কারও। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সদ্য গ্রেফতার হয়েছেন হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ।
উঠে আসছে নিত্যনতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য। বোঝাই যাচ্ছে তদন্ত যত এগোবে ততই উঠে আসবে আরও অনেক কিছু। কিন্তু এত কিছু পরেও পথে বসে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায় যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁদের কবে চাকরি হবে সেই উত্তর সবারই অজানা। উল্টে ন্যায্য চাকরির দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে বারবার তাঁদের উপর নেমে আসছে আঘাত। পুলিশ বলপ্রয়োগ করে থামিয়ে দিচ্ছে সেই ন্যায্য দাবির আন্দোলনকে। এই লজ্জা গোটা রাজ্যের। বাগদেবীর আরাধনায় যখন গোটা বাংলা ব্যস্ত তখন এই অমানবিক ছবি এখনও দেখা যাচ্ছে রাজপথে।
মঙ্গলবার সেই অমানবিক দৃশ্য ফের দেখা গেল শহরে। এদিন একদল চাকরিপ্রার্থী সল্টলেকে এসএসসি’র সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শূন্যপদের সংখ্যা আপডেট করে নিয়োগ করতে হবে যোগ্য প্রার্থীদের। যথারীতি পুলিশ তাঁদের জোর করে তুলে দেয় প্রিজন ভ্যানে। এছাড়া বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীকে পুলিশ ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। এমনকী পুলিশের লাঠির ঘায়ে একাধিক চাকরিপ্রার্থীর শরীরে কালশিটে পড়ে গিয়েছে। আহত একাধিক চাকরিপ্রার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা চাকরির দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশ তিনশোর বেশি চাকরিপ্রার্থীকে গ্রেফতার করেছে। পরে পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীরা শিয়ালদা অঞ্চলে মোমবাতি মিছিল করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন একটাই এমন প্রতিবাদ আগেও হয়েছে। তবে কি এমনটাই চলতে থাকবে? কিছুতেই কি সরকার এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে না?
শাসক দলের একশ্রেণির নেতারা যখন কোটি কোটি টাকা বেআইনিভাবে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে, তখন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা আর কতদিন রাস্তায় বসে কষ্ট করবেন? কতদিন তাঁরা পুলিশি জুলুম সহ্য করবেন? এই প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে একটাই আশার আলো আদালত। আদালতই সবাইকে বিচার পাইয়ে দেবে, এই বিশ্বাস রয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের। তাই এখন সে দিকেই তাকিয়ে সবাই।