ত্রিপুরায় বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিল বামফ্রন্ট! একগুচ্ছ চমক-সহ ইস্তাহার প্রকাশ

ত্রিপুরায় বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিল বামফ্রন্ট! একগুচ্ছ চমক-সহ ইস্তাহার প্রকাশ

d86914c95f14a90fad26800baf69d553

নিজস্ব প্রতিনিধি: ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে  কার্যত তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল মাত্র ২৮টি কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে পেরেছে। আর তিপ্রা মোথা ৪২টি আসনে প্রার্থী দিলেও মূলত ১৪টি জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলেই তারা লড়াইয়ের জায়গায় রয়েছে। অর্থাৎ শাসক বিজেপির সঙ্গে মূল লড়াই হতে চলেছে বাম-কংগ্রেস জোটের। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বামেরা তাদের ইস্তাহার প্রকাশ করল। সেখানে আড়াই লক্ষ কর্মসংস্থান, সরকারি কর্মীদের প্রতি বছরে দু’বার মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি, গরিব বয়স্ক নাগরিকদের জন্য মাসিক পেনশন, পুরনো পেনশন স্কিম ফিরিয়ে আনার মতো বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি ইস্তাহারে দেওয়া হয়েছে।

ত্রিপুরায়  অনিয়মের অভিযোগে বাম জমানায় ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরি চলে গিয়েছে। তাঁদের ফের চাকরি দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে ইস্তাহারে। যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের চাকরি চলে গিয়েছিল। যে ঘটনায় তৎকালীন বাম সরকারকে দায়ী করে থাকে তৃণমূল এবং বিজেপি। এই অবস্থায় সিপিএম নেতাদের প্রতিশ্রুতি তাঁরা ক্ষমতায় ফিরে আসলে মামলার জট কাটিয়ে তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দেবেন। বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর সাংবাদিক বৈঠকে ইস্তাহার প্রকাশ করে বলেন, “ত্রিপুরায় গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। গত পাঁচ বছরে রাজ্য কোনও উন্নয়ন হয়নি। বামেরা ক্ষমতায় এলে রাজ্যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে”। সেই সঙ্গে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বছরে ২০০ দিন কাজের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে বামেরা। আর যেহেতু কংগ্রেসের সঙ্গে তারা জোট করেছে তাই হাত শিবিরের সঙ্গে ন্যূনতম সাধারণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাম নেতৃত্ব। এভাবেই একগুচ্ছ চমক রেখে ইস্তাহার প্রকাশ করে  বিজেপিকে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে বামেরা। এদিকে নির্বাচনের আগেই লড়াই থেকে কার্যত সরে গিয়েছে তৃণমূল। তারা অর্ধেক আসনেও প্রার্থী দিতে পারেনি।

ত্রিপুরা পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কুড়ি শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিল। আগরতলা পুরনিগমে সিপিএমকে পিছনে ফেলে তারা দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। কিন্তু গত বছর ত্রিপুরায় চারটি বিধানসভার উপ-নির্বাচন হয়। সেখানে মুখ থুবড়ে পড়ে তৃণমূল। চারটি কেন্দ্রেই তাদের শুধু জামানত বাজেয়াপ্ত নয়, তৃণমূলের ভোট নেমে আসে ২.৮৭ শতাংশে। স্বাভাবিকভাবেই ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়েন ত্রিপুরা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে ২৮টি আসনে প্রার্থী দিয়ে তারা কতটা লড়াই করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেল। তাই রাজনৈতিক মহলের বিশেষ নজর ছিল প্রধান বিরোধী শক্তি বামেদের ইস্তাহারের দিকে। সেখানে ইস্তাহারে বামেরা আরও জানিয়েছে তারা ক্ষমতায় আসলে ত্রিপুরায় স্বশাসিত জেলা পরিষদের হাতে আরও বেশি ক্ষমতা তুলে দেবে। ইস্তাহারে ৮১ দফা বক্তব্য রাখা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল পুলিশের পদোন্নতি-সহ নানা সুযোগ সুবিধা প্রদান। এছাড়া সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও কর্মসংস্থান তৈরি করা। এই ইস্তাহার ভোটবাক্সে বামেদের কতটা সাফল্য এনে দেয় এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *