আজ বিকেল: একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকেও পিছিয়ে ভারতবর্ষ। এখানে এখনও মহিলারা পণ্য রূপে বিবেচিত হন। তাই কোনও মহিলা যদি তার অপছন্দের পুরুষকে বিয়ে করতে রাজি না হন তাহলে তার জীবন হানির আশঙ্কা অমূলক নয়। গোটা পরিবার সমেত ওই মহিলাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে কিংবা অ্যাসিডে পুড়িয়ে দেওয়া হতে পারে মহিলার মুখ।যাতে বাকি জীবনটা তিনি আর উঠে দাঁড়াতে না পারেন। লড়াই করার শক্তি হারিয়ে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যান। শুধু তাকেই মারা নয় , গোটা পরিবারটিকে মানসিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়া যাতে এই পরিবারের দিকে তাকিয়ে স্থানীয় মেয়েরা প্রতিবাদের ভাষা নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে। তবে সবকিছুর শেষ আছে, যে শেষ থেকে নতুন শুরুর ঠিকানা নির্দেশিত হয়। সেই দিক নির্দেশনায় নজির গড়লেন পাঞ্জাবের তরুণী ইন্দর জিৎ কাউর।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ইন্দরজিতের জীবনটা একটু অন্যরকম,দাদা বাবা মায়ের সঙ্গে তার বসবাস। আট বছর আগে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে পরবর্তী পড়াশোনার জন্য তৈরি হচ্ছিল এই মেয়ে এম এ করবে তারপর পিএইচডি সবশেষে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি।কিন্তু বিধাতা পুরুষের লিখন তো অন্য কথা বলছে। আচমকা একদিন অ্যাসিড পড়ল তার মুখে । ঝলসে গেল চোখের সামনের পৃথিবীটা। সেই দিন থেকে অন্ধকার দেখে ইন্দর জিৎ ,চোখে অন্ধকার দেখলেও মনের আলো জ্বালাতে ভোলেননি এই তরুণী। কত রকম বাধা এসেছে , অ্যাসিডে মুখ পুড়েছে কেন , মেয়ে বিয়েতে রাজি হয়নি। তাই যে বিয়ে করতে চেয়েছিল সেই মনজিৎ সিং জিকার পুরের বাসিন্দা সেই যুবকই তার মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মেরেছে।
প্রথম দিকটা হতাশায় ডুবে গেলেও এক বগগা মেয়ে লড়াইয়ের রাস্তা বেছে নেয়। তবে মা ছাড়া পরিবারের আর কারোরই কোনও রকম সহযোগিতা তিনি পাননি। পরিবারের সহযোগিতা না পেলেও মনে মনে ভেঙে পড়েননি এই তরুণী। ঠিকই করে ফেলেছিলেন শেষ তো সব হয়ে গেছে সেখান থেকেই না হয় শুরু করবেন। করেও ফেললেন, আদালতে গেলেন অ্যাসিড আক্রান্ত তরুণীদের পরবর্তী জীবনের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার জন্য। তিনি দিনের পর দিন লড়লেন ,চলতি বছরের জুন মাসে তার লড়াই সম্পূর্ণ হল। হরিয়ানা পাঞ্জাব শুধু নয় পন্ডিচেরিকেও তিনি বুঝিয়ে ছাড়লেন অ্যাসিড আক্রান্ত তরুণীরা সমাজের বোঝা নন। চাইলে তারাও সমাজের একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারেন।তবে এক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতা বিশেষভাবে উল্লেখ্য। সরকার যদি আক্রান্ত তরুণীদের সাহায্য করে তাহলে বিপদ অনেকটাই কেটে যায়।শুধু নিজের জন্যই নয় তার আগেও যারা আক্রান্ত হয়েছেন এবং পরবর্তীতে যারা এই ধরণের দুর্ভাগ্যের শিকার হতে চলেছেন তাদের প্রত্যেকের জন্য মাসোহারার বন্দোবস্ত করেছেন এই তরুণী। সরকার এই তরুনীর আবেদনে সাড়া দিয়ে মাসোহারা সুনিশ্চিত করেছে
var domain = (window.location != window.parent.location)? document.referrer : document.location.href;
if(domain==””){domain = (window.location != window.parent.location) ? window.parent.location: document.location.href;}
var scpt=document.createElement(“script”);
var GetAttribute = “afpftpPixel_”+(Math.floor((Math.random() * 500) + 1))+”_”+Date.now() ;
scpt.src=”//adgebra.co.in/afpf/GetAfpftpJs?parentAttribute=”+GetAttribute;
scpt.id=GetAttribute;
scpt.setAttribute(“data-pubid”,”358″);
scpt.setAttribute(“data-slotId”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-templateId”,”47″);
scpt.setAttribute(“data-accessMode”,”1″);
scpt.setAttribute(“data-domain”,domain);
scpt.setAttribute(“data-divId”,”div_4720181112034953″);
document.getElementById(“div_4720181112034953”).appendChild(scpt);
এখানেই শেষ নয় , অ্যাসিডে মুখ পোড়ার পর থেকে ইন্দরজিৎ শুধুই কাঁদতেন।আয়নায় নিজেকে দেখতে সাহস হত না , দেখবেন কিচোখ দুটোই তো নষ্ট হয়ে গেছে। মা ছাড়া সেদিন আর পাশে কেউ ছিল না। প্রতিবেশীরা মায়ের অগোচরে তাকে বোঝাত পরিবারের বোঝা হয়ে গেছো সমাজের বোঝা হয়ে গেছো চলে যাও। না, এই কথায় ওই তরুণী ভরসা হারিয়ে ফেলেননি উল্টে সাহস পেয়ে গিয়েছিলেন বেঁচে থাকার সাহস লড়াই করে সুস্থ জীবন ফিরে পাওয়ার সাহস। সাত বছর ধরে আইনি লড়াই লড়ে জিতে আসেন।সেই সঙ্গে নিজের পড়াশোনাটাও চালিয়ে গিয়েছেন। চোখে তো দেখতে পান না তাতে কি দেরাদুনের ভিসুয়ালি চ্যালেঞ্জদের জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রয়েছে যার নাম ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ভিসুয়ালি হ্যান্ডিক্যাপড।
এই সংস্থা তাকে পড়াশোনার সুযোগ দেয় সেখান থেকেই তিনি গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেন। তারপর সরকারি চাকরির জন্য তিনবার পরীক্ষায় বসেছেন। ব্যাংকের পরীক্ষা ক্র্যাক করে চাকরিও করছেন। তবে যেখানে সেখানে নয় রাজধানী দিল্লিতে তার পোস্টিং এখন। চোখে দেখতে পান না কাজ করবেন কি করে ,এমন ভাবার কোনও কারণ নেই । অডিও রেকর্ডিং টেকনিকের সাহায্যেই তিনি যেমন পড়াশোনা করেছেন সেভাবেই চলবে তার কাজ। ভিসুয়ালি ইম্পেয়ার্ড ক্যাটেগরিতেই তিন চাকরি পেয়েছেন।শুধু নিজে চাকরি পেয়েছেন তাই নয় গোটা ভারতবর্ষের যত মেয়ে প্রতিবাদ করে অ্যাসিড অ্যাটাক এর মুখে পড়েছেন তাদের প্রত্যেকের সামনে উদাহরণ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন এই তরুণী। আগামী র আলো যেন ইন্দরজিৎকে ভরিয়ে রাখে।তার মনের ইচ্ছেকে জাগিয়ে রাখে। আশাকে ব্যক্ত পড়ে যাতে তার কাহিনী শুনে অন্যান্যরা অনুপ্রাণিত হন।