বিরোধীদের দাবি মেনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন? কতটা লড়াই দিতে পারবে বিরোধীরা?

বিরোধীদের দাবি মেনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন? কতটা লড়াই দিতে পারবে বিরোধীরা?

 

কলকাতা:  পঞ্চায়েত নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল বিজেপি সাংগঠনিকভাবে বিভিন্ন ছোট বড় নির্বাচনের জন্য যে প্রস্তুত নয় তা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বুথ কমিটি গড়তে ফোন করার আহ্বান জানালেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। এ ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের তরফে বিজ্ঞাপন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের একটা বড় অংশে এখনও পর্যন্ত বুথ কমিটি তৈরি হয়নি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বহুবার এ ব্যাপারে জোর দিলেও তাতে কাজের কাজ হয়নি। এবার ফোনের মাধ্যমে বুথ কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। বিজেপির বক্তব্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে আদৌ এটা কতটা কাজে আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

 

পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করতে হবে, এই দাবি বহুদিন ধরেই তুলেছে রাজ্য বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিষয়টি নিয়ে আদালতে পর্যন্ত গিয়েছেন। এরপর আদালত জানিয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি এখনই প্রকাশ করা যাবে না। এর উপর যে অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা জারি করা ছিল তার মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির আগে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।

 

শুভেন্দু আবেদনে জানিয়েছিলেন, ২০১৩ সালে  কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না বলে পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক হিংসা দেখা দেয়। সেই দুটি নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু আবেদনে জানিয়েছেন আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করানো হোক। এছাড়া  অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতির নজরদারিতে হোক পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই দাবিও করেছেন তিনি। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উপর আগেই কলকাতা হাইকোর্ট যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তার মেয়াদ ২৭ তারিখ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে যদি পঞ্চায়েত নির্বাচন করা হয় তাতেও কি বিজেপি সুবিধা করতে পারবে? কারণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বুথের ভেতরে ঢোকার নিয়ম নেই।

 

সেখানে প্রত্যেকটি বুথে যদি বিজেপি এজেন্ট দিতে না পারে, তাদের শক্তিশালী বুথভিত্তিক সংগঠন না থাকে, তবে কি শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী দিলেই  সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? এই প্রশ্ন অবধারিতভাবে উঠছে। যদিও বিজেপির দাবি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে গায়ের জোরে বুথ দখল করা যাবে না। তাই এই দাবিতেই অনড় রয়েছে তারা। তাই শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয় কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − sixteen =