বিজেপি বিরোধিতায় হঠাৎ ‘ইন্ডিয়া’ কেন? কী পরিকল্পনা নয়া জোটের

বিজেপি বিরোধিতায় হঠাৎ ‘ইন্ডিয়া’ কেন? কী পরিকল্পনা নয়া জোটের

নয়াদিল্লি: নাম বদলানো যায়, কিন্তু স্বভাব? এক কথায় যদি উত্তর দিতে হয় তাহলে ‘না’ বলতে হবে। যতই চেষ্টা করা হোক, কেউ নিজের স্বভাব বদলাতে পারে না। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও এই বিষয়টি প্রযোজ্য হবে। প্রায় দুই দশক ধরে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোটের নাম ছিল ইউপিএ বা ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স। কিন্তু ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর তার অস্তিত্ব নামেই ছিল বলা যায়। এককভাবেই একাধিক রাজনৈতিক দল খাতায়-কলমে লড়ছিল নিজ নিজ রাজ্যে। কিন্তু বর্তমানে আবার নতুন আঙ্গিকে বিজেপি বিরোধী জোট তৈরি হল। ২০২৪ সালকে মাথায় রেখেই দেশের রাজনীতির ময়দানে আত্মপ্রকাশ করল ‘ইন্ডিয়া’। কিন্তু কেন এই জোট, কেন নামের দরকার পড়ল বিরোধীদের? 

বিজেপি তথা এনডিএ সরকারকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতেই ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর জন্ম নিয়েছিল ইউপিএ জোট। সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত সেই জোটকে নিয়েই লড়াই চালিয়ে এসেছে কংগ্রেস। কিন্তু তার যে ছন্দপতন হয়েই গিয়েছে তা বোঝা বাকি ছিল না। শেষ কয়েক বছরের মধ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বড় জয়ের পরই হয়তো বিজেপি বিরোধী জোটকে নতুন আঙিনায় ভাবা শুরু হয়েছিল। তার ফলস্বরূপ একাধিক বিরোধী দলকে একত্রে আনার যে প্রয়াস আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছিলেন, সেটাই এবার করেছেন নীতীশ কুমার। একাধিকবার বিরোধী শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি ২৬ দলের প্রতিনিধিকে কার্যত এক জায়গায় আনেন। শেষে গঠিত হয় ইউনাইটেড ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স বা ‘ইন্ডিয়া’। আর এই নাম নিয়েই এখন চর্চা। 

বলতে অসুবিধা নেই বিজেপির রাজনৈতিক ভাবধারা সম্পর্কে সকলেই অবগত। হিন্দুত্ববাদ, ধর্মীয় রাজনীতি এইসব শব্দগুলি তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের সঙ্গে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, জোটের এই নতুন নাম বিজেপির ঠিক এই জায়গাটিকে প্রত্যাঘাত করার জন্য। বিরোধীরা এই ‘ইন্ডিয়া’ নাম দিয়ে আসলে সাধারণকে বার্তা দিয়ে চাইছে যে, বিজেপি তথা এনডিএ জোট দেশের আপন নয়, ‘ইন্ডিয়া’ আপন। তারা একজোট হয়ে বিজেপি সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারবে। জানা গিয়েছে, বিজেপি বিরোধী জোটের নামের সঙ্গে ইন্ডিয়া বা ভারত রাখার প্রস্তাব প্রথমে এনেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। যদিও তিনি নিজে এই নাম প্রস্তাব করার আগে অনেকের সঙ্গে আলোচনা করেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

যদিও সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্ট ২৬টি রাজনৈতিক দলকে নোটিস পাঠিয়েছে ইতিমধ্যেই। এই ইস্যুতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন এক সমাজকর্মী। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক আঙিনায় জোটের নাম হিসেবে বিরোধী দলগুলি দেশের নাম ব্যবহার করতে কখনই পারে না। সেই মামলার বিষয়েই ২৬টি বিরোধী দল এবং নির্বাচন কমিশনকে নোটিস পাঠিয়েছে আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলাকারীর অভিযোগ, ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে বিরোধী দলগুলি এইভাবে দেশের নাম ব্যবহার করছে।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 1 =