সংরক্ষণ বিলেকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের

নয়াদিল্লি: উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে দায়ের সংরক্ষণ বিরোধী জনস্বার্থ মামলা৷ বৃহস্পতিবার জনস্বার্থ মামলাটি করেছে ‘ইয়ুথ ফর কোয়ালিটি’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংসদে বিল পাশ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির সইয়ের আগেই জনস্বার্থ মামলা দায়ের হওয়ার ঘটনায় ঝুলেই রইল উচ্চবর্ণের সংরক্ষণের ভবিষ্যৎ৷ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, সংরক্ষণ বিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের

b791a594511dfa11753fd213d174b002

সংরক্ষণ বিলেকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের

নয়াদিল্লি: উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে দায়ের সংরক্ষণ বিরোধী জনস্বার্থ মামলা৷ বৃহস্পতিবার জনস্বার্থ মামলাটি করেছে ‘ইয়ুথ ফর কোয়ালিটি’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংসদে বিল পাশ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির সইয়ের আগেই জনস্বার্থ মামলা দায়ের হওয়ার ঘটনায় ঝুলেই রইল উচ্চবর্ণের সংরক্ষণের ভবিষ্যৎ৷

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, সংরক্ষণ বিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী৷ আর্থিক দুর্বলতা সংরক্ষণের একমাত্র ভিত্তি হতে পারে না৷ এই বিলে সংবিধানের ভিত্তিকে অস্বীকার করা হয়েছে৷ সংরক্ষণ কেবলমাত্র আর্থিক কারণে হতে পারে না৷ এমনকী, ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের উর্ধ্বসীমা ভাঙে এই বিল আনা হচ্ছে৷

সংবিধান কী বলছে? দেশের সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ দেওয়া যায় না৷ বর্তমানে দেশে সংরক্ষণের পরিমাণ ৪৯.৫ শতাংশ৷ নতুন করে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ কার্যকর করতে হলে সংবিধানের ১৫ এবং ১৬ নম্বর ধারা সংশোধন করতে হবে৷ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদে সেই সংশোধনী পাশও হয়ে গিয়েছে৷

কোন কোন রাজ্যে ৫০ শতাংশের বেশি সংরক্ষণ: হরিয়ানা: ২০১৬-তে জাঠ-সহ ৬টি জাতিকে সংরক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে সংরক্ষণের মাত্রা ৬৭% হয়। আদালত বর্ধিত সংরক্ষণ স্থগিত করে। বিষয়টি রাজ্যের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশনে পাঠিয়ে দেয়৷ তামিলনাড়ু: ৬৯ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে৷ এসসি-১৯ শতাংশ, এসটি- ১ শতাংশ, ওবিসি- ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে৷ মহারাষ্ট্র: পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য ৫২ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে৷ ২০১৪ সালে মারাঠাদের জন্য ১৬ শতাংশ ও মুসলিমদের জন্য ৫ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা করা হয়৷ কিন্তু, হাইকোর্টে তা স্থগিত হয়ে যায়৷ তেলেঙ্গানায় ৬২ শতাংশ ও হরিয়ানায় ৬৭ শতাংশ ও রাজস্থানে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে৷

নয়া বিল অনুযায়ী, যে পরিবারের বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকার কম, তাদের আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ার আওতায় ধরা হবে৷ রিপোর্ট বলছে, ৯৫ শতাংশ ভারতীয় পরিবারেরই বার্ষিক আয় ৮ লক্ষের কম৷ বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকার অর্থ, ৫ জনের পরিবারে মাথাপিছু৷ মাসিক আয় ১৩,০০০ টাকার কিছু বেশি৷ এনএসএসও-র ২০১১-১২ সমীক্ষামতে মাথাপিছু মাসিক আয়, গ্রামে ২,৬২৫ ও শহরে ৬,১০৫ টাকা৷ দু’টিই ১৩,০০০ টাকার স্ল্যাবের অনেক কম৷

২০১৬-১৭-এর তথ্য বলছে, ২ কোটি ৩০ লক্ষ ভারতীয় বার্ষিক ৪ লক্ষের উপর আয় ঘোষণা করেছেন। ধরা যাক, প্রতি পরিবারের বার্ষিক ৪ লক্ষ টাকা উপার্জনকারী সদস্য ২ জন৷ এক্ষেত্রে এমন পরিবারের সংখ্যা ১ কোটি৷ এবং যত ভারতীয় এই সংরক্ষণের বাইরে থাকবেন ৮ শতাংশ৷ সোমবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য বলছে, দেশবাসীর বার্ষিক মাথাপিছু আয় ১.২৫ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ ৫ জনের পরিবারের ৬.২৫ লক্ষ টাকা, যা ৮ লক্ষের অনেক কম৷ নয়া বিল অনুযায়ী, ৫ একরের কম কৃষিজমি থাকলে দরিদ্র বলে গণ্য হবে৷ ২০১৫-১৬-এর কৃষি সমীক্ষা বলছে, ভারতে ৮৬.২% মালিকানাধীন কৃষিজমি ২ হেক্টরেরও কম! বিলের তৃতীয় শর্ত, ১০০০ বর্গফুটের থেকে ছোট বাড়ি থাকলে দরিদ্র বলে গণ্য হবে। ২০১২-এর এনএসএসও রিপোর্ট বলছে, ২০% ধনীর বাড়িরও গড় ফ্লোর এরিয়া ৫০০ বর্গফুট! ফলে, ৮০% বা ৯০% বাড়িই সংরক্ষণের মধ্যে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *