কলকাতা: হাতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা৷ আজ, দুপুরে শুরু হচ্ছে নবান্নের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা৷ ধুলে ঝেড়ে ফাইল হাতে নবান্নমুখী হতে শুরু করেছেন আধিকারিকরকা৷ ছুটির দিনেও নাওয়া-খাওয়া ভুলে বৈঠকের আগে ‘হোমওয়ার্ক’ করে ফেলেন শীর্ষ কর্তা থেকে আধিকারিকরা৷ পাঠে ভরা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেতে হয়৷ কিন্তু, এই ‘হোমওয়ার্ক’ করতে গিয়েই চাঞ্চল্যকর তথ্য চলে এসেছে শিক্ষা দপ্তরের কর্তাদের হাতে৷ কী সেই তথ্য?
জানা গিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগে বিলম্বের কারণ চিহ্নিত করতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছেন আধিকারিকরা৷ শিক্ষক নিয়োগের জটিলতার পেছনে মামলাকেই দায়ী করতে চলেছে কমিশন৷ স্কুলশিক্ষা দপ্তরের বিরুদ্ধে কত মামলা হয়েছে? তার বিস্তারিত আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পেশ করতে পারেন আধিকারিকরা৷ এখনও পর্যন্ত তালিকাভুক্ত হয়েছে প্রায় ৮ হাজার মামলা৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আদতে এর চেয়ে আরও বেশি মামলা চলছে৷ হয় সময়ের অভাবে সেগুলির তথ্য জোগাড় করা সম্ভব হয়নি, নয়তো মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ থেকে বাঁচতে তা কিছুটা কমিয়ে দেখাচ্ছে আধিকারিকদের একাংশ৷
পেনশন, গ্র্যাচুইটি বিষয়ক মামলার সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি৷ এ ছাড়াও রয়েছে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা৷ কর্মরত শিক্ষকরা নতুন স্কুলে কাজে যোগ দেওয়ার পর পে প্রোটেকশন না পেয়ে মামলা করেছেন৷ প্রধান শিক্ষকরা তিন শতাংশ বর্ধিত বেতন পাচ্ছেন না, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষদের পিএইচডি ডিগ্রির জন্য কেন বর্ধিত বেতন দেওয়া হবে না, শিক্ষকতার চাকরির আগে থেকেই যাঁরা উচ্চতর ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হয়েছেন, তাঁরা কেন বর্ধিত বেতন পাবেন না, এসব অভিযোগ, প্রশ্ন ও দাবি তুলে মামলা হয়েছে৷ শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সরকারের একাধিক নীতিগত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার সংখ্যা কম নয়৷ এই মামলাগুলি দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ থমকে দিয়েছিল৷ তবে, সন্তান প্রতিপালন এবং মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ার জন্য অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা সহকারী শিক্ষিকাদের হেনস্তা করেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেসব ঘটনায় সহকারী শিক্ষিকারা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে মামলা জিতেছেন৷ ফলে, শিক্ষা দপ্তরের জটিলার পেছনে মামলায় আজ অস্ত্র হতে চলেছে শিক্ষাদপ্তরের কর্তাদের কাছে৷