কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ গড়িমসি৷ নিয়োগের অপেক্ষায় না থেকে ফের শিক্ষকের চাকরি প্রত্যাখ্যান করলেন বহু প্রার্থীর৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনের নবম ও দশমের শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ে অনুপস্থিতির চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যা সেই প্রত্যাখ্যানেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে৷ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের আশঙ্কা, দু’বছর ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ার কারণেই চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে তীব্র অনীহা৷ অনেকেই পেয়ে গিয়েছেন, অন্য চাকরি৷ কমিশনের অপেক্ষায় না থেকে কত জন প্রার্থী চাকরি প্রত্যাখ্যান করলেন?
কমিশন সূত্রে খবর, নবম ও দশমের শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ে হাজির হননি অন্তত ১৫০ জন৷ ফলে, ধরে নেওয়ায় যেতে পারে, এই ১৫০ জন্য চাকরিপ্রার্থী নিজের ইচ্ছাতেই শিক্ষাকতার চাকরি প্রত্যাখ্যান করেছেন৷ অথবা অন্য ভাল চাকরি পেয়ে গিয়েছেন৷ কেননা, যখন দেশজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে বেকরাত্বের সংখ্যা, তখন এই প্রত্যাখ্যান অত্যন্তত তাৎপর্যপূর্ণ৷
এর আগেও উচ্চ মাধ্যমিকস্তরে শিক্ষক নিয়োগেরও একই ভাবে প্রত্যাখ্যান অব্যাহত ছিল৷ গত বছর উচ্চ মাধ্যমিকস্তরে ৪১৯৬ জনের প্যানেল প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ সূত্রে খবর, ২৬০ জন প্রার্থী চাকরি নেননি৷ প্রান্তিক এলাকায় পোস্টিং পাওয়ায় এই অনীহা বলে মনে করছে এসএসসি। এছাড়াও কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে ১৩৭ জন সাক্ষাৎকারে আসেননি। ৮৪ জন কর্মরত শিক্ষক নতুন পোস্টিং প্রত্যাখ্যান করেন৷ সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী দিনে ১৫০ জন চাকরিপ্রার্থী পরবর্তী সুযোগ পেতে চলেছেন ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা৷ আদালতে মামলার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘ দিন থমকে ছিল৷ লোকসভা ভোটের আগে নতুন করে শুরু হতে চলেছে উচ্চ প্রাথমিকে ভেরিফিকেশন৷ এখনও প্যানেল প্রকাশ হয়নি৷ কবে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে তা জানাতে পারেনি এসএসসি৷
‘যোগ্য প্রার্থী’ না মেলায় ফাঁকা পড়ে রয়েছে বেশ কিছু শূন্যপদ৷ সোমবার ফাঁকা থাকা শূন্যপদের সংখ্যা জানিয়ে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ ও ক্লার্ক ও গ্রুপ ডি পদে ফাঁকা রয়েছে বেশ কিছু শূন্যপদ৷ কমিশনের যুক্তি, ‘যোগ্য প্রার্থী’ না মেলায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷
মঙ্গলবার এসএসসি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় আচার্য ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানালেন নতুন চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার জানান, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ৫,৭১১টি পদের জন্য ৪,৮৮৯ জনের সুপারিশ তালিকা আগেই ছাড়া হয়েছে৷ তবে ৮২২টি পদে কোনও যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায়নি৷ মাধ্যমিক স্তরে প্রথম দফায় তালিকা পাঠানো হয়েছে ৬,৫২৪ জনের। জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির গোড়ায় ৬,৩৮১ জনের তালিকাও পাঠানো হবে৷ ক্লার্কের মোট শূন্যপদ ছিল ২ হাজার ৫৭টি। তার মধ্যে ২ হাজার ১৩ জনের তালিকা পাঠানো সম্ভব হয়েছে। ৪৪টি পদে যোগ্য প্রার্থী মেলেনি। গ্রুপ ডি পদেও ৩ হাজার ৯৫৫ জনের মধ্যে ৩ হাজার ৮৪৭ জন যোগ্য প্রার্থী মিলেছে। বাকি ১০৮টি পদ ফাঁকা রয়ে গিয়েছে।
এই মুহূর্তে গ্রুপ ডি এবং গ্রুপ সি’র নিয়োগ হয়েছে জেলা অনুযায়ী। উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে কিছু পদ ফাঁকা থাকার কারণ হল, নির্দিষ্ট বিষয় বা মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক প্রার্থী মেলেনি৷ সে কারণেই সমস্যা৷ শারীরশিক্ষায় ১,০৩৪টি এবং কর্মশিক্ষায় ১,০৯৯টি শূন্যপদের সবকটিতেই যোগ্য প্রার্থী মিলেছে। সেই তালিকা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে খবর৷