নয়াদিল্লি: কেউ মাসের শেষে ক্রেডিটেড বেতন নিয়ে হাসতে হাসতে শপিংমলে যাবেন, কেউ আবার ক্ষুদ্র পাওনাগন্ডা বুঝে নিতে মাস শেষের বেতনের অঙ্ক বার বার গুনবেন। মেয়ের পড়াশোনা, ছেলের উচ্চশিক্ষা, মায়ের অপারেশন, জমির লোন,তারপরে রইল বাকি সংসার খরচের টাকা। নুন আনতে পান্তা ফুরনো অবস্থা। ভারতবর্ষের এই বৈষম্যের ছবিটা বদলাতে পারত কেন্দ্রে মোদি সরকার। তা না করে এই সমস্যার মুখে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের প্লাস্টার লাগিয়ে দিল। এহেন সংরক্ষক্ষণ কখনওই উপার্জনের বৈষমত্যার উত্তর হতে পারে না। সম্প্রতি আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া উচ্চবর্ণের জন্য সংরক্ষণ চালু করেছে কেন্দ্র। দেশে ফিরে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই তোপ দাগলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ডক্টর অমর্ত্য সেন।
তিনি বলেন, কংগ্রেস সরকার একটা বড়মাপের ভুল করেছিল, তাহল সংরক্ষণকে চিরস্থায়ী করা। বর্তমান এনডিএ সরকার সেটাকেই আরও একটু বাড়িয়ে দিল। তবে দেশের আগামীর উন্নতি চাইলে এই গোটা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের একটা সুযোগ তাদের কাছে, কিন্তু তা ব্যবহার করা হল না। কংগ্রেস চাকরি ক্ষেত্রে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেনি। আর মোদি সরকার সেই চাকরির না পাওয়া ক্ষেত্রকে নরকের দরজায় টেনে নিয়ে গিয়েছে। সংরক্ষণ কখনও পিছিয়ে পড়াদের চাওয়াপাওয়া মেটাতে পারে না।
উচ্চবর্ণের এই সংরক্ষণ নিয়ে মোদি সরকারের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসবার পরে পরেই বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়েছে। অনেকেরই দাবি, উচ্চবর্ণের পিছিয়া পড়া মানুষজনের উন্নতির জন্য নয়, ভোট রাজনীতির ফায়দা তুলে ফের ক্ষমতায় আসার জন্য সংরক্ষণের তাস খেলেছে বিজেপি সরকার। এনিয়ে যখন দেশের রাজ্য রাজনীতি সড়গরম তখন অর্থনীতিবিদের বক্তব্য ফের বিতর্ক উসকে দিল। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে হেরে যাওয়ার পর রীতিমতো গদি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে বিজেপি, তায় গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো চেপে বসছে মহাজোট। এমতাবস্থায় নোবেলজয়ী বঙ্গসন্তানের মন্তব্য গেরুয়া শিবিরকে যে অস্বস্তিতে ফেলবে তা স্পষ্ট।