কলকাতা: ফুড ইন্সপেক্টর পদে লিখিত পরীক্ষার জোড়া বিভ্রান্তি৷ কোথায় টাকার বিনিময়ে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ, কোথায় আবার প্রশ্নপত্র দেরিতে আসায় নির্ধারিত সময়ের পর শুরু হল পরীক্ষা৷ রাজ্যের দুই প্রান্তে নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে৷ পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরতে গিয়েও চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েন রাজ্যের কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী৷ বাস, ট্রেনে উপচে পড়া ভিড়ে নাজেহাল হয়ে পড়েন পরীক্ষার্থীদের একাংশ৷
আরও পড়ুন: ফুড ইন্সপেক্টর পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ‘ফাঁস’! সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ছবি
জানা গিয়েছে, পিএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেরিতে পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে বাঁকুড়ার কাঞ্চনপুর হাইস্কুলে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়৷ এদিন ওই কেন্দ্রে পিএসসি খাদ্য দপ্তরের সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ পরীক্ষার সিট পড়েছিল৷ কিন্তু প্রশ্নপত্র পৌঁছাতে দেরি হয়৷ এরপরই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পরীক্ষার্থীরা৷ পরে প্রশ্নপত্র আসায় প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে পরীক্ষা শুরু হয়৷
অন্যদিকে, খোদ শহর কলকাতায় পরীক্ষা শুরুর আগে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি তৈরি হয়৷ ফুড ইন্সপেক্টর পদে লিখিত পরীক্ষার বসার আগেই নয়া ‘কেলেঙ্কারি’র পর্দাফাঁস করেন কয়েকশো চাকরিপ্রার্থী৷ রবিবার পরীক্ষা শুরুর আগে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘তোলাবাজি’র অভিযোগ এনে বিক্ষোভ দেখান চাকরি-প্রার্থীদের একাংশ৷ ৫০ টাকার বিনিময়ে ব্যাগ রাখার ব্যবস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখান চাকরি-প্রার্থীদের একাংশ৷ আর জেরে কলকাতার কৃষ্ণপুর আদর্শ বিদ্যালয়ে চত্বরে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷ পরে, পুলিশ কর্তাদের আশ্বাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ফুড ইন্সপেক্টর পদে লিখিত পরীক্ষায় চাকরি-প্রার্থীদের ব্যাগ নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার উপর বিধিনিষেধ জারি করা হয়৷ স্কুল গেটের বাইরে পরীক্ষার্থীদের ব্যাগ রাখতে বলা হয়৷ অথবা, পাশের একটি দোকানে ৩০ থেকে ৫০ টাকার বিনিময়ে ব্যাগ রাখতে বলা হয়৷ এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরি-প্রার্থীদের একাংশ৷ তাঁদের অভিযোগ, টাকা বিনিময়ে নির্দিষ্ট দোকানে ব্যাগ রাখার কথা বলেন এক পুলিশ কর্মী৷ ওই পুলিশ কর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা৷ পরে, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মাঠে নামেন এক পুলিশকর্তা৷ পরিস্থিতি সামাল দেন৷ পরে, চাকরি-প্রার্থীদের ব্যাগ পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতে বলা হয়৷
প্রায় সাড়ে ন’শোর বেশি শূন্যপদের জন্য ১১ লক্ষ ৬০ হাজার প্রার্থী পরীক্ষায় বসছেন আজ৷ ২০০৯ সালে পিএসসি রাজ্য সরকারি দপ্তরে গ্রুপ-ডি পরীক্ষার আয়োজন করেছিল৷ সেখানে প্রায় ১৬ লক্ষ পরীক্ষার্থী থাকলেও তিনদিন ধরে তিনটি ব্যাচে পৃথকভাবে তা অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ যার জন্য প্রতিটি ব্যাচের ক্ষেত্রে তিনটি করে মোট ন’টি পৃথক প্রশ্নপত্রের সেট তৈরি করতে হয়েছিল পিএসসি’কে৷ কিন্তু আজ রবিবারের পরীক্ষায় একদিনে এক সেট প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে ফুড ইন্সপেক্টর পদে পরীক্ষা নেওয়া হয়৷ এক দিনে, একই সময়ে সাড়ে ১১ লক্ষ পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে মাসুল গুনতে হয় চাকরিপ্রার্থীদের৷ পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাদুড়ঝোলা পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ ট্রেন-বাসেও ছিল উপচে পড়া ভিড়৷ ভিড়ঠাসা ট্রেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় চাকরিপ্রার্থীদের৷