পাটনা: অন্ধকারের পরেই কিন্তু ভোরের আলো ফোটে, পরিবেশ পরিস্থিতি অনেক সময়ই এই সারসত্যকে বুঝে ওঠার সুযোগ দেয় না। যদিও বা সুযোগ মেলে তখন মানসিক ভয় পথ রোধ করে। মনে হয় অন্তরের অন্তঃস্থলে প্রায় অবচেতনে থাকা দ্বিতীয় সত্ত্বা জেগে উঠেছে যা সফল হওয়ার আগেই ব্যর্থতার দরজাকে দেখতে পায়। তাই কঠোর পরিশ্রম করলেও হেরে যাওয়ার ভয় মোটেই পিছু ছাড়ে না, তবু কাঙ্খিত ভোর আপনার শিয়রে চলে এলে ঘুমিয়ে থাকবেন কার সাধ্যি। জয় আসবেই, সেই জয়যাত্রা আপনাকে সব পেয়েছির দেশে সেরার শিরোপায় ভূষিত করবে তাতে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।এমনটাই ঘটেছে বিহারের আইজি অমিত লোধার জীবনে।
মেধাবী হওয়ার কারণে কোনও ধরনের পরীক্ষাতেই ব্যর্থ হতেন না,তবে ব্যর্থতার ভীতি তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াতো অহরহ। সবসময় ভাবতেন,এই বুঝি হেরে গেলেন,তাঁর ব্যর্থতায় সবাই হাসছে তাঁকে দুয়ো দিচ্ছে। সেই মানুষটিকেই বদলে দিল বাস্তবের উপেক্ষা। জয় করলেন অমিত লোধা,রাজস্থানের অন্তর্মুখী কিশোর একদিন বিহারের আইপিএসের দায়িত্ব নিয়ে স্থানীয় শেখপুর এলকার ত্রাস গব্বর সিংকে জেলে পুরলেন তিনি।এই কাজ করতে গিয়ে গব্বরের সঙ্গে তাঁকে মাস তিনেক ধরে ইঁদুর বিড়ালের দৌড় দৌড়তে হয়েছে।তিন বার নিজের জীবন বিপন্ন হয়েছে দুবার পরিবারকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন।
শেষ পর্যন্ত সফলতা এসেছে, দুই রাতে ২জনের খুনি তথা মোট ৪০জনকে খুনের পর পাঁচ বছর ধরে জেলের বাইরে ঘুরে বেড়ানো গব্বর আজ অমিত লোধার বদান্যতায় জেলের ঘানি টানছে। এতেই শেষ নয়, এহেন সাফল্যের পর অমিতকে বেগুসরাইয়ের আইজি করা হয়।সেখানে দায়িত্বভার গ্রহণ করেই মাওবাদী দমনে উদ্যোগী হন এই পুলিশকর্তা স্বল্পসংখ্যাক পুলিশ নিয়েই সুকৌশলে একটা মাওবাদী গ্যাংকে হাতেনাতে ধরেন।পুরুষ মহিলা-সহ মোট ছজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অনেক অস্ত্র ও টাকাও উদ্ধার হয়। মাওবাদীদের গুলিতে প্রাণ যায় তাঁর দেহরক্ষীর,অত্যন্ত আহত অবস্থায় দুই জওয়ানকে উদ্ধার করেন। একেবারে কান ঘেঁষে চলে যায় মৃত্যুর হাতছানি, এই কৃতিত্বের জন্য রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুলিশ মেডেলও জিতে নেন অমিত।
সেই অমিত লোধা যিনি প্রথমবারের চেষ্টায় দিল্লি আইআইটির পরীক্ষায় সফল হন,সেখানে স্কোয়াশ খেলতে গিয়ে নার্ভাস হয়ে যেতেন।এজন্য কম হেনস্তা হতে হয়নি, কিন্তু অন্তর্মুখী ছেলেটি তো আইএএস দাদুকে দেখেই নিজের ভবিষ্যতের গতিবিধি ঠিককরে নিয়েছিল।তাতে আসলই বা ভয় ও ভাবনার বাধা পরিশ্রম তো আর বিফলে যেতে পারে না।