কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে চলেছে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন৷ আজ তৃতীয় দিনের অনশনেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী৷ মেয়ো রোডে রেস ক্লাবের সামনে এসএসসি প্রার্থীদের অনশন মঞ্চে গিয়ে নাম না করে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ চাকরিপ্রার্থীদের অনশনে মাথার উপর কোনও ছাউনি না থাকায় এদিন চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি৷ চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা সমাধানে শিক্ষামন্ত্রীকেও ফোন করেন সুজন৷
এদিন রাজ্যকে আক্রমণ করে সুজন বলেন, ‘‘দিদিমণির ধর্নায় রাজকীয় মঞ্চ তৈরি হয়৷ কিন্তু, চাকরিপ্রার্থীদের অনশনের জন্য মাথার উপর একটা ছাউনিও তৈরি করতে বাধা দেয় পুলিশ৷ এটা কী চলছে জানি না৷ সন্তান তুল্য চাকরি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে সরকার৷ এটা বন্ধ হওয়া জরুরি৷’’ চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এদিন সুজনবাবু সরাসরি শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন করেন৷ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আর্জিও জানা৷ কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কোনও সমস্যার সমাধান সূত্রে তৈরি হয়নি বলেই খবর৷ নিয়োগের দাবিতে টানা তিন দিনে পড়ল চাকরিপ্রার্থীদের তরফে অনশন৷ অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী৷
চাকরি সংক্রান্ত খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন
কিন্তু, কেন এই অনশন কর্মসূচি? চাকরিপ্রার্থীদের অনশন প্রসঙ্গে কী যুক্তি কমিশনের? এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, পর্যাপ্ত শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও সফল চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না৷ নিয়োগের ক্ষেত্রে অনুপাতও মানা হচ্ছে না৷ যদিও চাকরিপ্রার্থীদের সমস্ত দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন এসএসসির চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার৷ সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, কমিশনের কাছে যাঁরা অভিযোগ নিয়ে আসছেন, তাঁদের বোঝানো হয়েছে৷ কিন্তু কেউ যদি মেয়ো রোডে গিয়ে আন্দোলন করেন, তাহলে তো তাঁদের বোঝানো যাবে না৷ কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষা বিষয়ে নিয়োগের বিষয়টি ঝুলে রয়েছে মামলার জন্য। কমিশন পর্ষদকে সুপারিশ আগেই পাঠিয়ে দিয়েছি। সঠিক অনুপাতে প্রার্থীদের না ডাকার অভিযোগও ভিত্তিহীন। কারণ নিয়ম মেনেই ১:১.৪ অনুপাতে ডাকা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশিও হয়েছে। কারণ সেই প্রার্থীদের অভিন্ন নম্বর ছিল। সেটা নিয়েও আবার একপ্রস্থ আপত্তি উঠেছিল। আর প্যারাটিচারদের সংরক্ষণ দেওয়ার জন্য আদালতের নির্দেশ রয়েছে। তা থেকে কমিশন সরে আসতে পারে না। কেউ যদি আদালতকে বুঝিয়ে এই সংক্রান্ত রায় নিয়ে আসতে পারে, তাহলেই আর কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষায় সংরক্ষণ দেওয়া হবে না৷
তবে, কমিশনের তরফে চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হলেও পাশে দাঁড়িয়েছেন বাম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী৷ শনিবার সকালে অনশনমঞ্চে গিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন৷ চাকরিপ্রার্থীদের দেওয়া তথ্য দেখে বোঝার চেষ্টা করেন, সমস্যাটা ঠিক কোথায়৷ তথ্যপ্রমাণ দেখার পর চাকরিপ্রার্থীদের কোনও প্রয়োজনে তিনি ও তাঁর দল সর্বদা পাশে থাকবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি৷ এমনকী আইনি প্রয়োজন হলেও তিনি পাশে থাকবেন বলেও কথা দেন সুজন৷