এবার দিল্লিতে উঠল বাংলার বঞ্চিত শিক্ষকদের আওয়াজ

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বঞ্চিত প্রাথমিক শিক্ষকরা সমবেতভাবে দিল্লির যন্তর-মন্তরে বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। কর্মসূচিতে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশ নেন। কীভাবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন, উদ্যোক্তা সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব ও বিভিন্ন বক্তা তা তুলে ধরেন। উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পৃথা বিশ্বাস এ কথা জানিয়ে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে উপস্থিত হন

এবার দিল্লিতে উঠল বাংলার বঞ্চিত শিক্ষকদের আওয়াজ

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বঞ্চিত প্রাথমিক শিক্ষকরা সমবেতভাবে দিল্লির যন্তর-মন্তরে বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। কর্মসূচিতে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশ নেন। কীভাবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন, উদ্যোক্তা সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব ও বিভিন্ন বক্তা তা তুলে ধরেন।

উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পৃথা বিশ্বাস এ কথা জানিয়ে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে উপস্থিত হন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, ত্রিপুরার সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ। তাঁরা প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন। রাজ্যসভার দুই সাংসদ মতি ঝর্ণা দাস, হুসেন ডালভী এ দিন সমাবেশে ভাষণ দেন৷

তাঁরা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উচিত অবিলম্বে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি মিটিয়ে দেওয়া। অন্যান্য রাজ্য পারলে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করতে পশ্চিমবঙ্গও পারবে। উদ্যোক্তারা জানান, ‘ন্যায্য দাবীর’ জন্য বক্তারা সর্বতোভাবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বামপন্থী নেতা জি দেবরাজন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে অবিলম্বে প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই ন্যায্য দাবিকে পূরণ করার কথা বলেন। আন্দোলনকারীদের হয়ে বক্তব্য রাখেন নয়াদিল্লির ‘ডেমোক্রেটিক ল-ইয়ার এসোসিয়েশন’-এর এক প্রতিনিধি। তিনি বলেন আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষিকাদের পশ্চিমবঙ্গ সরকার বঞ্চিত করতে পারে না। সম কাজে সম বেতন দেওয়া যে কোনও গণতান্ত্রিক রাজ্য সরকারের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি আন্দোলনকারীদের সব রকম আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। উদ্যোক্তা প্রতিনিধিরা ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন (এনসিটিই)-কে স্মারকলিপি দেন।

এনসিটিই-র তরফ থেকে জানানো হয়, তারা সমহারে বেতন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আবেদন করেছে| কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি লিখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলবেন। পৃথা বিশ্বাস জানান, “বিভিন্ন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা বহুদিন আগে থেকেই সর্বভারতীয় বেতনহার পাচ্ছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এনসিটিইএ-র নিয়ম অনুযায়ী যোগ্যতা অর্জন করলেও কম বেতন পাচ্ছেন। সর্বভারতীয় হার অনুযায়ী একজন প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকার বেতনক্রম হল ৯,৩০০ টাকা থেকে ৩৪,৮০০ টাকা এবং গ্রেড পে ৪,২০০ টাকা| কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন ক্রম ৫,৪০০ টাকা থেকে ২৫,২০০ টাকা এবং গ্রেড পে ২,৬০০ টাকা। হিসাব করলে দেখা যায় শুরুতে একজন প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকা প্রতি মাসে প্রায় ন্যূনতম ১২,০০০ টাকা কম।

পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের বক্তব্য, দীর্ঘ দিন ধরে সর্বভারতীয় প্রাথমিক শিক্ষক বেতন হারের জন্য তাঁরা অরাজনৈতিকভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজ্য স্তরে বহুবার ধর্ণা, মিছিল বিক্ষোভ অবস্থান করা হয়। আন্দোলন করতে গিয়ে শিক্ষকদের জেল পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাঁর সাথে আলোচনায় বসেন শিক্ষকরা। তিনি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই ন্যায্য দাবির প্রতি সহমত পোষণ করলেও আদৌ শিক্ষকরা সর্বভারতীয় প্রাথমিক বেতনহার পাবেন কি না, সে বিষয়ে কোনও উত্তর দেননি। শিক্ষক-শিক্ষিকারা মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁদের দাবি-দাওয়া পেশ করে তাঁর বক্তব্যের জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। উনি শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেননি, দাবি-দাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। বাধ্য হয়ে দিল্লি অভিযানের ডাক দেয় উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − four =