নয়াদিল্লি: নিকি যাদব হত্যাকাণ্ডে তোলপাড় দিল্লি৷ পুলিশি জেরায় উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ জানা গিয়েছে, সকালে নিজের বাগদান পর্বের অনুষ্ঠানে বন্ধুদের সঙ্গে নাচগান হুল্লোড় করার পর রাতে প্রেমিকাকে খুন করেছিলেন সাহিল গেহলত। তদন্তে এমন বহু নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে দিল্লি পুলিশের হাতে।
আরও পড়ুন- গরম পড়তেই বাড়তি বিদ্যুতের বিলের চিন্তা! কোন কৌশলগুলি মানলে স্বস্তিতে থাকবে পকেট?
জানা গিয়েছে, ৯ এবং ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যবর্তী রাতে ২২ বছরের প্রেমিকা নিকি যাদবকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন সাহিল৷ অন্তত তেমনটাই অভিযোগ৷ গাড়িতে থাকা মোবাইল ফোনের ডেটা কেবলের তার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে প্রেমিকাকে খুন করেন তিনি৷ জেরায় দিল্লি পুলিশের কাছে সে কথা কবুল করেছেন অভিযুক্ত৷
সাহিল দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির নফজরগড় এলকার একটি ধাবার মালিক৷ নজফগড়ের মিত্রাওঁ গ্রামে বাড়ি তাঁর৷ সাহিলের দাবি, বাড়ি থেকে পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করার জন্য তাঁকে ক্রমাগত চাপ দেওয়া হচ্ছিল। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে এনগেজমেন্ট ও বিয়ের দিনক্ষণও ঠিক করে ফেলা হয়। সাহিল বুঝতে পারছিলেন না তিনি কী করবেন। নিজের লিভইন পার্টনারের সঙ্গে সম্পর্ক জিইয়ে রাখবেন, নাকি পরিবারের সদস্যদের কথা মেনে অন্য মেয়ের সঙ্গে বিয়ের পিড়িতে বসবেন।
সাহিল পুলিশকে জানান, ঘটনার রাতে গাড়ি করে যাচ্ছিলেন তাঁরা৷ কাশ্মীরি গেট আইএসবিটি-র কাছে পৌঁছনোর পর নিকির সঙ্গে তাঁর ঝামেলা শুরু হয়৷ বিয়ে নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে নাকি আগে থেকেই মাথা গরম ছিল তাঁর। তার উপর নিকি অশান্তি শুরু করলে আর শান্ত থাকতে পারেননি। রাগের মাথায় গাড়িতে থাকা ডেটা কেবল দিয়েই নিকির গলায় ফাঁস দিয়ে দেন৷ শ্বাসরোধ করে নিকিকে মেরে ফেলেন সাহিল৷
কিন্তু কাশ্মীরি গেটে কেন? জবাবে সাহিল ওই রাতের ঘটনার বিবরণ দেন। সাহিলের কথায়, ঘটনার পনেরো দিন আগে তিনি বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন৷ ৯ ফেব্রুয়ারি ছিল তাঁর বাগ্দান পর্ব৷ সেই পর্ব মেটার পর তিনি আবার নিকির কাছে ফিরে আসেন৷ সারা রাত নিকির সঙ্গে উত্তম নগরের বাড়িতেই ছিলেন৷ নিকি সাহিলকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। গোয়া যাবেন বলে নিজের টিকিটও বুক করে ফেলেছিলেন। পরে অনলাইনে সাহিলের টিকিট বুক করতে গেলে সমস্যা তৈরি হয়। তাই গোয়া যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে দেন নিকি। পুলিশের কাছে এমনটাই দাবি সাহিল।
তিনি আরও বলেন, গোয়ার পরিবর্তে এবার হিমাচল প্রদেশ যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তাঁর প্রেমিকা। সেই উদ্দেশেই উত্তম নগরের বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে সোজা নিজামুদ্দিন রেলস্টেশনে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, টিকিট নেই। তাই বাস ধরবেন বলে রেল স্টেশন থেকে বেরিয়ে আনন্দবিহার বাস টার্মিনাসে যান৷ সেখানে পৌঁছে জানতে পারেন, কাশ্মীরি গেটের আইএসবিটি-র কাছ থেকে একটি বাস ছাড়বে। তাই আর দেরি না করে গাড়ি নিয়ে সোজা কাশ্মীরি গেটে চলে যান সাহিল এবং নিকি। কিন্তু, সেখানে পৌঁছতেই দু’জনের অশান্তি শুরু হয়৷ এর পরেই নিকিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন৷
কিন্তু, সাহিল আদৌ সত্যি বলছেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে পুলিশের৷ কারণ, জিজ্ঞাসাবাদের সময় সাহিল পুলিশ আধিকারিকদের জানিয়েছিলেন, তিনি বিয়ে করবেন কিনা তা নিয়ে দোটানায় ছিলেন। কিন্তু সিসি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, বাগদান পর্বে সাহিল রীতিমতো তাঁর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মজা করছেন। নাচানাচি করছেন৷ পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ হাতে এলেই সব সত্য বেরিয়ে আসবে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>