চলতি নির্বাচনের প্রেক্ষিতে বেকারত্ব যে একটা বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়াছে, সেটা জানাচ্ছে একটি সমীক্ষা। বিতর্কিত ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিসের সার্ভে ডেটা জানাচ্ছে, গত ছ’বছরে খোয়া গিয়েছে ৬ কোটি নতুন চাকরির পদ। এই সমীক্ষা আরও জানাচ্ছে, ২০১৭-১৮ সালে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১ শতাংশ যা গত ৪৫ বছরে সবচেয়ে বেশি। এই কারণে দেশে অধিকাংশ তরুণ প্রজন্ম এই পরিস্থিতি নিয়ে ভয়ঙ্কর চিন্তিত।
এদের অধিকাংশই বেকার ও আরও বেশি সংখ্যক মানুষ আন্ডার-এমপ্লয়েড। যে কোনও সরকারি চাকরির জন্য যে পরিমাণ আবেদন জমা পড়ে তার বিপুল পরিমাণ দেখলেই বোঝা যায় আমাদের দেশে একটা সংকট চলছে। মুদ্রাস্ফীতি যেমন সবাইকেই কমবেশি সমস্যায় ফেলে, তেমনই আনএমপ্লয়মেন্ট যারা বেকার তাদেরকেই আক্রমণ করে। কেন তৈরি হচ্ছে না নতুন চাকরির পদ, এই নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সময়ে আলোচনা করেছেন। এর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো নেমে এসেছে নির্বাচন। আর তাই সবাই বলতে শুরু করেছেন ‘এটা সম্পূর্ণই এই সরকারের দোষ’ অথবা ‘এটা সম্পূর্ণই বিগত সরকারের দোষ’। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি এর কোনওটাই বেকারত্বের এই হারের জন্য দায়ি নয়। জিডিপি আসে মূলত তিনটি ক্ষেত্র থেকে। এগ্রিকালচার, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং সার্ভিসেস। প্রথম ক্ষেত্রটি থেকে বেশি চাকরি সৃষ্টি হচ্ছে না, তার কারণ এই অঞ্চলের যে পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল সেটা গ্রহণ করা হয়নি। এগ্রিকালচার আমাদের দেশে এখনও সংগঠিত সেক্টর নয়। দ্বিতীয় যে সেক্টর অর্থাৎ, ম্যানুফ্যাকচারিং, সেখানে আরও বেশি সংখ্যক চাকরির পদ তৈরির জন্য বড় রকমের বিপ্লবের প্রয়োজন ছিল। তৃতীয় ক্ষেত্রটি হল সার্ভিসেস। এই একটি অঞ্চল গত কয়েক দশকে চাকরির পদ তৈরি করার ব্যাপারে বেশ সক্রিয়। কিন্তু আরও বেশি চাকরির পদ তৈরি হয়নি৷ কারণ হচ্ছে স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। সমীক্ষা জানিয়েছে ৮০ শতাংশ ইঞ্জিনিয়ার দক্ষতার অভাবে ভুগছে।