আজ বিকেল: ভালমানুষরা যে এরেবারে মরে যাননি বা ফুরিয়ে যাননি তার অন্যতম নিদর্শন বোধহয় অয়নবাবু। বিরাটি লাগোয়া বিশরপাড়া অঞ্চলের বাসিন্দা অয়ন দে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সফটওয়্যার সিকিওরিটি নিয়ে গবেষণা করছেন অয়ন। নিজের কোনও সংস্থা নেই, তবুও অন্যের কর্মসংস্থানের বন্দোবস্ত করে চলেছেন তিনি। একটাই লক্ষ্য তাঁর আশপাশের মানুষজন যেন পেটভরে দুমুঠো খাবার খাওয়ার সুযোগ পায়।
না, কোনওরকম টাকাপয়সা কমিশনের ভিত্তিতে নয়, রীতিমতো শখেই পরিচিত অপরিচিত বেকার যুবক যুবতীকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়াই তাঁর মূল উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্য সফল করতেই ফেসবুকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার গ্রুপ স্টার মার্ক তৈরি করেন তিনি। কোথাও কোনও সংস্থা কর্মী নিয়োগ করতছে জানতে পারলে ফোন নম্বর দেখে নিজেই সেই সংস্থার সঙ্গে কথা বলেন। কতজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে, কী যোগ্যতা লাগবে, বেতন কত, সংস্থার নিয়মই বা সব বিশদে জানার পরই। তিনি গ্রুপেচাকরির বিজ্ঞাপন দেন। সেই বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই যোগাযোগ করে। এরপর আগ্রহী প্রার্থীদের সিভি নিজেই ঝাড়াই বাছাই করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি করেন। তারপর প্রাথমিক ইন্টারভিউর সম্পর্কে একটা সুচিন্তিত পরামর্শ দেন।
বলা বাহুল্য, বহু বেকার যুবক যুবতী আজ তাঁর জন্য উপার্জনক্ষম হয়েছেন। তবে এসবের বিনিময়ে তিন কোনও সহানুভূতি, সম্মান দক্ষিণা কিছুই চান না। এক শপিংমল কোম্পানি তাঁর সঙ্গে কর্মী নিয়োগের জন্য যোগাযোগ করেছিল কিন্তু যখন জানতে পারল কর্মী নিয়োগের জন্য কোনও কমিশনই নেবেন না অয়ন দে, তখনই আলোচনায় ইতি টেনে দেয় ওই সংস্থাটি সংস্থার মতে কমিশন না নিলে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না। অনেকেই চাকরি পেয়ে টাকা দিতে চেয়েছেন, একবার এক ব্যক্তি চাকরি পাওয়ার তাঁর বাড়িতে এসে মিষ্টির প্যাকেট রেখে গিয়েছিলেন, এখনও পর্যন্ত এই কাজের জন্য এটুকুই প্রাপ্তি তাঁর।