বেতন কমিশন কার্যকর হলে কতটা বাড়বে বেতন? কী বলছে ইঙ্গিত?

কলকাতা: সরকারি কর্মীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করার দায়িত্ব বেতন কমিশনের৷ সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো পরিকাঠামোর পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকা পঞ্চায়েত পুরসভার কর্মী, সরকারি বোর্ড, কর্পোরেশনের কর্মচারীদের বেতন কাঠামো সুপারিশ করে বেতন কমিশন৷ ষষ্ঠ বেতন কমিশন ২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর রাজ্যের ষষ্ঠ বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছিল৷ ৩ বছর ৭ মাস কেটে যাওয়ার পর রিপোর্ট এখনও সরকারের কাছে

বেতন কমিশন কার্যকর হলে কতটা বাড়বে বেতন? কী বলছে ইঙ্গিত?

কলকাতা: সরকারি কর্মীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করার দায়িত্ব বেতন কমিশনের৷ সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো পরিকাঠামোর পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকা পঞ্চায়েত পুরসভার কর্মী, সরকারি বোর্ড, কর্পোরেশনের কর্মচারীদের বেতন কাঠামো সুপারিশ করে বেতন কমিশন৷ ষষ্ঠ বেতন কমিশন ২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর রাজ্যের ষষ্ঠ বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছিল৷ ৩ বছর ৭ মাস কেটে যাওয়ার পর রিপোর্ট এখনও সরকারের কাছে জমা পড়েনি৷ তবে বেতন কমিশনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে নবান্নে জমা পড়তে পারে৷ কিন্তু, কী চমক থাকছে বেতন কমিশনের সুপারিশে?

বেতন কমিশন সূত্রে খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৪.২৮ শতাংশ হারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করতে চলেছে বেতন কমিশন৷ বাম আমলে পঞ্চম বেতন কমিশনের একজন গ্রুপ-ডি সরকারি কর্মীর ৩৩ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি করা হয়৷ শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ বেতন কমিশন যদি ১৪.২৮ শতাংশ হারে বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করে, তা কর্মচারীদের কাছে বঞ্চনার শামিল হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে৷

কমিশন সূত্রে ইঙ্গিত, কেন্দ্রীয় সরকারের সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশের মতোই রাজ্য ষষ্ঠ বেতন কমিশন নয়া বেতন  কাঠামো গড়ে তোলার জন্য নবান্নে প্রস্তাব দিতে চলেছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সপ্তম বেতন কমিশনের মাধ্যমে মূল বেতনের উপর ২.৫৭ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি ঘটছে৷ যদিও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা সপ্তম বেতন কমিশনের কাছে মূল বেতনের উপর ৩.৭১ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধির দাবি করেছিল৷ কেন্দ্রের সপ্তম বেতন কমিশন চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সাত কিস্তিতে ১২ শতাংশ মহার্ঘভাতা বকেয়া রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের৷ বেতন কমিশন সূত্রে খবর, ২০১৬ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে নয়া বেতন কাঠামো কার্যকর করার জন্য রাজ্য সরকারকে সুপারিশ করবে রাজ্য বেতন কমিশন৷ ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে বেতন কমিশনের কাজ শুরু করেছে৷ মোট পাঁচ দফায় বাড়ানো হয়েছে বেতন কমিশনের মেয়াদ৷

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের নেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার সময় থেকে সব রাজ্য সরকারি কর্মীদের বর্ধিত বেতন চালু হওয়ার প্রথা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি হয়েছে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে৷ ওই সময় কেন্দ্রীয় কর্মীরা ১২৫ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন৷ রাজ্য কর্মীদের ডিএ ছিল ৭৫ শতাংশ৷ এর তিন বছর পর চলতি বছরে জানুয়ারি মাস থেকে রাদ্য কর্মীদের ডিএ ১২৫ শতাংশ হয়েছে৷

এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল ২০১৬ সালে৷ রাজ্য সরকারি কর্মীদের পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশে বেতন বৃদ্ধি কার্যকর হয়েছিল ২০০৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে৷ নিয়ম অনুযায়ী ৩৯ মাসের বকেয়া প্রাপ্য ছিল রাজ্য সরকারি কর্মীদের৷ কিন্তু, বামফ্রন্ট সরকার ১২ মাসের বকেয়া তিনটি কিস্তিতে দেয়৷ বাকি ২৭ মাসের বকেয়া দেওয়া হয়নি৷ যদিও ধরে নেওয়া হয়েছিল, রাজ্য কর্মীদের নতুন বেতন হার কেন্দ্রীয় কর্মীদের মতো ২০০৬ সাবে জানুয়ারি মাস থেকে চালু হয়েছিল৷ এটাকে প্রশাসনিক ভাষায় ‘নোশনাল’ বৃদ্ধি বলা হয়৷

এবার এটা কী হবে? সে ব্যাপারে সরকারের তরফে কোনও ইঙ্গিত এখনও দেওয়া হয়নি৷ কিন্তু, রাজ্য সরকার ডিএ বৃদ্ধি ও বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে যেভাবে আর্থিক সঙ্কটের কারণ প্রথম থেকেই দেখাচ্ছে, তাতে বকেয়া দেওয়া নিয়ে একটা সংশয় থাকছে৷ কারণ সাড়ে ৩ বছর তো দূরের কথা, আগের বারের মতো এক বছরের বকেয়া মেটাতে গেলে বিপুল আর্থিক দায়ভার নিতে হবে সরকারকে৷ এমনিতেই বেতনন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হলে বেতন ও পেনশন খাতে সরকারের খরচ বছরে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি হবে৷ এর সঙ্গে বকেয়া মেটাতে গেলে এককালীন বিপুল খরচ হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *