কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বৈঠক নজরুল মঞ্চ থেকে শিক্ষকদের গ্রেড-পে বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ শিক্ষামন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর এবার সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গ্রেড-পে বৃদ্ধির ঘোষণা রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের৷
শুক্রবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে শিক্ষা দুপ্তরের তরফে জানানো হয়, রাজ্যপাল প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ অনুমোদন নিয়েছে৷ প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড-পে ২৬০০ টাকা থেকে পে-ব্রান্ড-টু ৩৬০০ টাকা করা হচ্ছে পে-ব্রান্ড-থ্রিতে৷ অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের গ্রেড-পে ২৩০০টাকা থেকে ২৯০০টাকা করা হচ্ছে৷ আগামী পয়লা অগস্ট থেকে কার্যকর হবে৷ নতুন গ্রেড পে কার্যকর হলে প্রাথমিক শিক্ষক পদে কাজে যোগ দিলেই ২১ হাজার টাকার পরিবর্তে ২৫ হাজার ৯৭০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যাবে৷
বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের গ্রেড পে বৃদ্ধির ঘোষণা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা আপনাদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করার কথা ভাবছি৷ আমি আপনাদের গ্রেড-পে ৩২০০ টাকা সুপারিশ করেছিলাম৷ কিন্তু, ৩৬০০টাকা গ্রেড পে করা যায় কি না, তা ভেবে দেখা হচ্ছে৷ কবে থেকে চালু হবে তা আমরা জানিয়ে দেব৷ এই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা তো আমাদের করতে হবে৷ দেখি, কোথা থেকে তা আনা যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী চান শিক্ষকদের গ্রেড পে ৩৬০০ টাকা করা হোক৷’’ পে-স্কেল নিয়ে তৃণমূল শিক্ষক সমিতির সদস্যরা আওয়াজ তুললেও তা এড়িয়ে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘‘দাঁড়ান, নির্দেশ প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন৷’’
কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা ঘিরে হঠাৎ জারি হয় বিভ্রান্তি! পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে প্রাথমিক শিক্ষকদের ৫ ধরনের গ্রেড পে ব্যবস্থা চালু আছে৷ প্রথমটি ২ হাজার ১০০ টাকার গ্রেড পে, দ্বিতীয়টি ২ হাজার ৩০০ টাকার গ্রেড পে, তৃতীয়টি ২ হাজার ৬০০ টাকার গ্রেড পে, চতুর্থটি ২ হাজার ৯০০ টাকার গ্রেড পে ও শেষ গ্রেড পেটি ৩ হাজার ১০০ টাকার৷ শিক্ষকদের আশঙ্কা, যদি পে ব্যান্ড টু থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের পে ব্যান্ড তিনে নিয়ে যাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে গ্রেড পে অন্তত ৪ রকমের হওয়ার কথা৷ সেক্ষেত্রে তা হতে পারে ৩ হাজার ২০০ টাকা৷ দ্বিতীয়টি ৩ হাজার ৬০০ টাকা, তৃতীয়টি ৩ হাজার ৯০০ টাকা ও শেষ গ্রেড পের স্তর ৪ হাজার ১০০ টাকা৷ ফলে, গ্রেড পে অন্তত ৩ হাডার ২০০ টাকা কিংবা ৩ হাজার ৬০০ টাকা করার মাধ্যমে ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন শিক্ষামন্ত্রী? তা বুঝে উঠতে পারছেন না শিক্ষকদের একাংশ৷ যদি প্রাথমিক শিক্ষকদের পে ব্যান্ড তিনের আওতায় নিয়ে যাওয়া হয় তা হলে তো কারও কারও ৩৬০০ টাকার বেশি গ্রেড পে হচে পারে৷ তা হলে এই ৩৬০০ টাকা গ্রেড-পের অর্থ কী? শিক্ষামন্ত্রী কি ৪ ধরনের গ্রেড পে ভেঙে একই গ্রেড পে দিতে চাইছেন? জারি বিভ্রান্তি৷