বেতন বাড়লেও বঞ্চনার শিকার বাংলার প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক! কিন্তু কেন?

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বৈঠক নজরুল মঞ্চ থেকে শিক্ষকদের গ্রেড-পে বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ শিক্ষামন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর এবার সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গ্রেড-পে বৃদ্ধির ঘোষণা রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের৷ কিন্তু, এই ঘোষণার পরও বঞ্চনার অভিযোগ পিছু ছাড়ছে না৷ প্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বাড়লেও খুব একটা বাড়েনি অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের৷ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরও

বেতন বাড়লেও বঞ্চনার শিকার বাংলার প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক! কিন্তু কেন?

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বৈঠক নজরুল মঞ্চ থেকে শিক্ষকদের গ্রেড-পে বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ শিক্ষামন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর এবার সরকারি ভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গ্রেড-পে বৃদ্ধির ঘোষণা রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের৷ কিন্তু, এই ঘোষণার পরও বঞ্চনার অভিযোগ পিছু ছাড়ছে না৷ প্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বাড়লেও খুব একটা বাড়েনি অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের৷ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরও সরকারি উদাসীনতা কারণে অপ্রশিক্ষিতের তকমা না কাটায় বেতন বঞ্চনার অভিযোগ বাংলার প্রায় ৭০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের৷

অপ্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষকদের অভিযোগ, ‘‘২০১৪, ২০১৭ সালে NIOS থেকে D.EL.ED করা প্রায় ৭০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙ্গে যে বঞ্চনা হল তার কথা কেউ বলছেন না৷ তাঁদের কেন পে-ব্যান্ড টু’তে রাখা হল? তাঁরা সবাই NIOS থেকে D.El.Ed পাশ করে গিয়েছেন৷ পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশিত হয়েছে৷ তা সত্ত্বেও তাঁদের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি৷ যদি তাঁদের অপ্রশিক্ষিত করে রাখ হয়ে থাকে, তাহলে কেন পে-ব্রান্ড-থ্রিতে ৩২০০ নন ট্রেন্ড গ্ৰেড পে রাখা হল না? প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরও কেন প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য দুই ধরনের পে ব্যান্ড? এই বিষয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ প্রযোজন৷’’

ইতিমধ্যে নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায় NIOS থেকে D.EL.ED  প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের ফলাফল ও মার্কশিটের ভিত্তিতে এ ক্যাটাগরিতে উত্তীর্ণ করা হয়েছে৷ আগামী মাস থেকে তাঁরা বর্ধিত বেতন পাবেন৷ তাহলে একই রাজ্যের বাকি জেলাগুলোর শিক্ষকরা কেন বঞ্চনার শিকার হবেন? প্রশ্ন তুলছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ৷ তাঁদের আরও অভিযোগ, এর আগে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর সফল শিক্ষকদের তথ্য জেলা প্রাথমিক সংসদের তলব করলেও তা এখনও পর্যন্ত কার্যকর হয়নি৷ জানা গিয়েছে, অপ্রশিক্ষিতদের তথ্য দ্বিতীয় বারের জন্য চেয়ে পাঠিয়েছে বারাসত জেলা প্রাথমিক সংসদ৷ কিন্তু, অভিযোগ, এর আগেও জেলা প্রাথমিক সংসদের এই তথ্য জমা করানো হলেও অপ্রশিক্ষিত থেকে প্রশিক্ষিত হওয়ার তকমা পাননি প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ৷ আর তাতেই বেতন বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছেন তাঁরা৷

শুক্রবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে শিক্ষা দপ্তরের তরফে জানানো হয়, রাজ্যপাল প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ অনুমোদন নিয়েছে৷ প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড-পে ২৬০০ টাকা থেকে পে-ব্রান্ড-টু ৩৬০০ টাকা করা হচ্ছে পে-ব্রান্ড-থ্রিতে৷ অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের গ্রেড-পে ২৩০০টাকা থেকে ২৯০০টাকা করা হচ্ছে৷ আগামী পয়লা অগস্ট থেকে কার্যকর হবে৷ নতুন গ্রেড পে কার্যকর হলে প্রাথমিক শিক্ষক পদে কাজে যোগ দিলেই ২১ হাজার টাকার পরিবর্তে ২৫ হাজার ৯৭০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যাবে৷

বেতন বাড়লেও বঞ্চনার শিকার বাংলার প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক! কিন্তু কেন?

হিসাব বলছে, অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকদের বেতন হবে, পে-ব্যান্ড ৬ হাজার ৭০০ টাকা৷ গ্রেড পে ২৯০০ টাকা৷ মহার্ঘ ভাতা বাবদ (১২৫ শতাংশ) ১২ হাজার টাকা৷ বাড়ি ভাড়া বাবদ ১৫ শতাংশর হিসাবে ১৪৪০ টাকা৷ সঙ্গে মেডিক্যাল বাবদ ৩০০ টাকা৷ সব মিলিয়ে ২৩ হাজার ৩৪০ টাকা পাবেন অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকরা৷

বেতন বাড়লেও বঞ্চনার শিকার বাংলার প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক! কিন্তু কেন?প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা পাবেন, পে ব্যান্ড ৭ হাজার ৪৪০ টাকা৷ গ্রেড পে বাবদ ৩ হাজার ৬০০টাকা৷ মহার্ঘ ভাতার ১২৫ শতাংশ বাবদ ১৩ হাজার ৮০০টাকা৷ হাউস রেন্টের ১৫ শতাংশ বাবদ ১ হাজার ৬৫০ টাকা৷ মেডিক্যাল অ্যালাউন্স বাবদ ৩০০ টাকা৷ সব মিলিয়ে ২৬ হাজার ৭৯৬টাকা৷

বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের গ্রেড পে বৃদ্ধির ঘোষণা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা আপনাদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করার কথা ভাবছি৷ আমি আপনাদের গ্রেড-পে ৩২০০ টাকা সুপারিশ করেছিলাম৷ কিন্তু, ৩৬০০টাকা গ্রেড পে করা যায় কি না, তা ভেবে দেখা হচ্ছে৷ কবে থেকে চালু হবে তা আমরা জানিয়ে দেব৷ এই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা তো আমাদের করতে হবে৷ দেখি, কোথা থেকে তা আনা যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী চান শিক্ষকদের গ্রেড পে ৩৬০০ টাকা করা হোক৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + 8 =