নয়াদিল্লি: রেলের পর এবার সরকারি দু’টি টেলিকম সংস্থার কর্মীদের আগাম অবসর নেওয়ানোর পথে হাঁটতে চলেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ চলতি সপ্তাহে রেলে কর্মী ছাঁটাই না করার ব্যাখ্যা দিয়ে ঘুরপথে অন্তত ৩ লক্ষ কর্মীর আগাম অবসর নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রেল মন্ত্রক৷ এবার বিএসএনএল ও এমটিএনএলের কর্মীদের উপর কোপ দিতে চলেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার৷
সরকারি উদ্যোগের অভাবে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আর্থিক দুর্দশা চরমে উঠেছে সরকারি টেলিমক সংস্থা বিএসএনএল ও এমটিএনএলের ভাণ্ডারে৷ কয়েক হাজার কোটির টাকা লোকসানের বোঝা তৈরি হয়েছে৷ আর সেই কারণে এবার ওই দুই সংস্থার কর্মীদের স্বেচ্ছা অবসরের কোপ আনতে চলেছে কেন্দ্র৷
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ওই দুই সংস্থার প্রায় এক লক্ষ কর্মীকে চলতি বছরের মধ্যেই স্বেচ্ছা অবসর নিতে বাধ্য করা হতে পারে৷ ওই দুই সরকারি সংস্থায় দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করা কর্মীদের ক্ষেত্রেই এই স্বেচ্ছা অবসর স্কিম প্রযোজ্য হতে চলেছে বলে খবর৷ প্রথমিক ভাবে ইঙ্গিত, কমবেশি দেড় লক্ষ কর্মীর মধ্যে ৫০ বছর বয়স ছুঁলেই কর্মী-অফিসারদের উপর পড়তে চলেছে এই কোপ৷
অন্যদিকে, রেলে কর্মী ছাঁটাইয়ের নয় ব্যাখ্যা মন্ত্রকের৷ ঘুরপথে অন্তত ৩ লক্ষ কর্মীর আগাম অবসর নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি রেলের৷ সরাসরি কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলেও ঘুরপথে কর্মীদের কর্মদক্ষতা বিবেচনা করে আগাম অবসর নিতে বাধ্য করা হতে পারে৷ রেল কর্তৃপক্ষের এহেন সিদ্ধান্তের জেরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়তে চলেছে অন্তত ৩০ বছর ধরে কাজ করা রেল কর্মীদের৷
তবে, বিজ্ঞপ্তি জারি করে রেলের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখন থেকে কর্মীদের বিচার করা হবে পারফরম্যান্স৷ এর আগেও বিচার করা হতো কর্মীদের পারফরম্যান্স। কিন্তু সেভাবে তখন গুরুত্ব দেওয়া হত না৷ এখন থেকে রেল কর্মীদের পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হবে৷ পারফরম্যান্স আশানুরূপ না হলে ওই কর্মীকে আগাম অবসরের প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে৷ রেল মন্ত্রক কখনই কর্মী ছাঁটাই করবে না৷ গত ২০১৪ থেকে ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৬২ জনকে চাকরি দিয়েছে রেল৷ কখনই রেল কর্মী ছাঁটাই করেনি৷
রেলের কর্মী সংগঠনের দাবি, রেলের আগাম অবসরের সিদ্ধান্ত মূলত ৩০ বছরের উপরে কাজ করা কর্মীদের উপর চাপতে পারে৷ কর্মীদের চাকরিতে টিকে থাকতে দিতে হতে পারে দক্ষতার পরীক্ষা৷ সেই দক্ষতা খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে৷ এই মুহূর্তে রেলে প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ কর্মী কাজ করেন৷ এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ৩ লক্ষ কর্মী কাজ হারাতে পারেন বলে কর্মী সংগঠনগুলির আশঙ্কা৷