বালেশ্বর: গতকাল যে রেল দুর্ঘটনা হয়েছে ওড়িশার বালেশ্বরে তাতে তিনটি ট্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবথেকে ক্ষতি হয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। পাশাপাশি দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের। আর রিল একটি মালগাড়ি, যার একেবারে ওপরে করমণ্ডলের ইঞ্জিনের উঠে গিয়েছে। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা হল সে বিষয়ে তো এখনও কিছু পরিষ্কার হচ্ছেই না, উলটে এই মালগাড়ির ওপর ট্রেনের ইঞ্জিন উঠে যাওয়া নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। এই ঘটনাটি কী করে সম্ভব হল তার উত্তর মিলছে না।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, মালগাড়ির পিছনে এসে ধাক্কা মেরেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস, তারপর সেটির অধিকাংশ কামরা লাইনচ্যুত হয় এবং তার ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির ওপর। কিন্তু রেলের একাধিক সূত্র দাবি করছে, এই দুর্ঘটনায় মালগাড়ির কোনও ভূমিকাই নেই! রেলের দাবি, কোনও কারণে প্রথমে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। সেটি গিয়ে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে। সেই লাইন ধরে তখন আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেটি এসে ওই লাইনচ্যুত কামরাগুলিকে ধাক্কা মারে এবং তাতে তারও দু-তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। আর এই ধাক্কার কারণেই করমণ্ডলের ইঞ্জিনটি তৃতীয় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির ওপরে উঠে যায়।
কিন্তু বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলছে। ছবি দেখে স্পষ্ট যে, মালগাড়ির সঙ্গে ট্রেনের মুখোমুখি কোনও সংঘাত হয়নি। আর ঘটনার অভিঘাত দেখে বোঝাই যাচ্ছে ট্রেনের গতি বেশ ভালোই ছিল। অনেকের অনুমান, একই লাইনে আগে থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কোনও ইঞ্জিনের সামনে, বা কামরার মধ্যে ও পিছনে ‘বাফার’ থাকে। তাই মালগাড়িতে ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনের সামনে থাকা বাফার সেটিকে ঠেলে ওপরের দিকে তুলে দিয়েছে। যে কারণে ওয়াগনের ওপর গিয়ে আটকে গিয়েছে করমণ্ডলের ইঞ্জিন। এক্ষেত্রে এও বলা হয়েছে, মালগাড়ির ওয়াগনগুলি ভর্তি ছিল। খালি থাকলে ট্রেনের ইঞ্জিন সমেত কয়েকটি কামরা মালগাড়ির মধ্যে ঢুকেই যেত।