কলকাতা: আশঙ্কা সত্যি করে আরব সাগরের বুকে জন্ম নিল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই ঘূর্ণিঝড় আরও শক্তি বাড়িয়ে অতিশক্তিশালী ঝড়ে পরিণত হবে। এই ঝড়ের প্রভাব পড়বে বাংলায়৷ যা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ৷ কিন্তু কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কী ভাবে পড়বে রাজ্যে?
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ভারতের মূল ভূখণ্ডে বর্ষা ঢুকতে অনেকটা দেরি করে ফেলবে৷ গত মে মাসেই মৌসম ভবন জানিয়েছিল, চলতি বছর ১ জুনের বদলে বর্ষা ঢুকতে ৪ জুন হয়ে যাবে। কিন্তু সেই সময়ও পেরিয়ে গিয়েছে৷ বর্ষার দেখে মেলেনি৷ আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, আরব সাগরে সৃষ্টি নিম্নচাপের টানে মৌসুমী বায়ুর মেঘমণ্ডলী ভারতীয় উপকূল থেকে অনেকটা দূরে সরে গিয়েছে৷
এদিকে বাংলায় সাধারণভাবে বর্ষা ঢোকে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে৷ ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’-এর জেরে তা আরও দেরিতে ঢুকবে। ফলে গরম থেকে এখনই রেহাই পাবে না রাজ্যবাসী৷ রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে৷
গাঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায় তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমডি। বিশেষ করে পশ্চিম ও দক্ষিণের জেলাগুলিতে তীব্র গরম পড়বে৷ আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত পূর্ব ঝাড়খণ্ডে তীব্র দাবদাহ চলবে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে তাপপ্রবাহের কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের মালদা, দুই দিনাজপুরেও ১০ জুন পর্যন্ত তাপপ্রবাহের কমলা সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর৷
আবহবিদদের আশঙ্কা, বর্ষার উপর কুপ্রভাব ফেলবে ওই ঘূর্ণিঝড়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় বা মায়ানমারের ঘূর্ণাবর্ত কোনওটাই পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারবে না।’’ মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান জানান, শনিবার পর্যন্ত বঙ্গে দহন-জ্বালা থাকবে। তবে শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্সে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, বর্তমানে পূর্ব-মধ্য এবং পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। এটি ধীরে ধীরে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে অতিশক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। সাগরপৃষ্ঠে ‘ঘূর্ণিঝড়’ বিপর্যয় জন্ম নেওয়ার পর প্রায় তিন ঘণ্টা একই স্থানে অবস্থান করবে। সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’-এর অবস্থান এখন গোয়া থেকে ৯০০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম, মুম্বই থেকে ১০২০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম, গুজরাটের পোরবন্দর থেকে ১০৯০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম এবং করাচি থেকে ১৩৮০ কিমি দক্ষিণে৷ এটি ধীরে ধীরে উত্তরে গুজরাটের দিকে এগিয়ে যাবে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>