রাতারাতি প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছাড়া কীভাবে আস্ত একটা নদী বাঁধ ধ্বংস হয়ে গেল? দক্ষিণ ইউক্রেনের খেরসন প্রদেশের রুশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের নদী বাঁধ কাখোভকা। যে নদীবাঁধ দুই দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেনের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। সেই নদী বাঁধ ধ্বংস করার নেপথ্যে তাই নাশকতার ছক বলেই মনে করা হচ্ছে। নাশকতার ছক রাশিয়ার বলে দাবি ইউক্রেনের। নাশকতা কার বা কীভাবেই বা নাশকতার তত্ত্ব সামনে আসছে সেই বিষয়ে যাওয়ার আগে কাখোভেক নদী বাঁধ সম্পর্কে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
কাখোভকা নদী বাঁধ:
• কাখোভকা জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র ইউক্রেনের খেরসন অঞ্চলের নোভা কাখোভকা শহরে অবস্থিত
• বর্তমানে নোভা কাখোভকা রাশিয়ার দখলে
• সোভিয়েত আমলে এই কেন্দ্র তৈরি হয়
• নিপ্রো নদীর পাশ ঘেঁষে মোট ছয়টি জলাধারের একটি কাখোভকা
• এই জলাধার রাশিয়া-ইউক্রেনের জন্য বড় অংশের জল ধরে রাখে
• চাষের জন্য এই বিশাল জলাধার থেকে জলের জোগান হয়
• জাপোরিঝঝিয়া পারমানবিক বিদ্যুত্কেন্দ্রকে শীতল রাখতে এই জলাধার কাজে লাগে
যে খবর বা উপগ্রহ ছবি সামনে আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বাঁধটির অবস্থা শোচনীয় ছিল। বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ছিল। বাঁধ ভেঙে পড়ার কারণ হিসেবেও প্রতিদিনের ক্ষতির ছবিকেই সামনে আনা হচ্ছে। যদিও এই বিশাল বাঁধ ধ্বংস হওয়ার ফলে অন্তত ১৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত বা ঘরছাড়া বলে খবর। ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত।
কাঠগড়ার রাশিয়া:
গত ফেব্রুয়ারিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে বন্দর শহর খেরসন সহ গোটা প্রদেশ মস্কোর নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ৯ মাস পর ইউক্রেন সেনা সেই প্রদেশ পুর্নদখল করে। যদিও বেশ কয়েকটি এলাকা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেই থেকে যায়। ইউক্রেনের দাবি, জেলেনেস্কির সেনাকে ভয় পেয়েই এই বাঁধ ওড়ানোর ছক রাশিয়ার। যাতে ইউক্রেন সেনারা এই বাঁধ ধ্বংসের কারণে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়। আবার রাশিয়ার পাল্টা দাবি, ক্রিমিয়া উপদ্বীপে যাতে শুকিয়ে যায় তাই এই নাশকতার ছক ইউক্রেনের। পুতিন ও জেলেনেস্কি যখন একে অপরকে দোষারোপ করতে ব্যস্ত, তখন এই নদী বাঁধ ধ্বংসের কারণে দুই দেশের মানুষই বিপন্ন। তবে, বিশ্লেষকদের মত, এই বাঁধ ধ্বংসের ফলে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে ক্রিমিয়াই। ইউক্রেনেরও ক্ষতির আশঙ্কা মারাত্মক। তাই, রুশ -ইউক্রেন ছাড়া বাইরের কোনও শক্তি এই নাশকতার নেপথ্যে কি না, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।