কলকাতা: কেন মেটানো হচ্ছে না মহার্ঘ ভাতা? কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে ন্যায্য অধিকার থেকে? রাজ্যের মুখ্যসচিবকে খোলা চিঠি পাঠিয়ে মহার্ঘ ভাতা ইস্যুতে ফের বিদ্রোহ ঘোষণা কনফেডারেশন অফ স্টেট গভমেন্ট এমপ্লয়িয়ের৷
সংগঠনের সভাপতি শ্যামল কুমার মিত্র খোলা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন ২০১২-২০১৩ অর্থবছর থেকে ২০১৭-২০১৮ পর্যন্ত ছ’টি অর্থবর্ষে কর্মচারীদের বেতন ও পেনশন খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ২,৮৪,৫০৯.৯৭ কোটি টাকা৷ কিন্তু এই ছ’টি অর্থবর্ষে প্রকৃত ব্যয় হয়েছে ২,৭০,৬৫৪.৩৯ কোটি টাকা৷ অর্থাৎ রাজ্য বাজেটে অর্থের সংস্থান থাকা সত্বেও কর্মীদের বেতন পেনশন খাতে ১৩,৮৫৫.৫৮ কোটি টাকা রাজ্য সরকার খরচ করেনি৷ যে অর্থে কর্মচারীদের অন্তত ৪৬ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া যেত৷
সংগঠনের আরও দাবি, ‘‘অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সমিক্ষা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন ও রাজ্যকে দেওয়া কেন্দ্রীয় সহায়তা খাতে দেশের প্রধান প্রধান রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশের পর সব থেকে বেশি অর্থ পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দাবি অনুসারে অভ্যন্তরীণ কর সংগ্রহ ও আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অতিক্রান্ত ৮ বছরে রাজ্যে নজিরবিহীন উন্নতি করেছে৷ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী গত ১০ আগস্ট দাবি করেছেন, দেশজুড়ে আর্থিক মন্দা নিলেও পশ্চিমবঙ্গে তা রুখে দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ জিডিপি বৃদ্ধির হার ১২.৫৮ শতাংশ৷ এই রাজ্যে সারা ভারতে প্রথম স্থান দখল করেছে৷’’
জানানো হয়েছে, ‘‘আপনি নিশ্চিত হবেন, কেনও রাজ্যের ক্ষেত্রে ঋণগ্রহণ একটি অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া মাত্র, যে প্রক্রিয়ায় ভারতের সব কটি রাজ্য আছে৷ বেশকিছু রাজ্য সর্বমোট ও মাথাপিছু ঋণ পশ্চিমবঙ্গের থেকে অনেক বেশি৷ অর্থাৎ অর্থসংকট বা অর্থের অভাব নয়৷ পশ্চিমবঙ্গে কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন না স্রেফ সরকারি সদিচ্ছার অভাবে৷ গত ২৬ জুলাই রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল কর্মীদের বকেয়াসহ কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া ও তার স্বপক্ষে স্ট্যান্ডিং অর্ডার প্রকাশের যে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে তার অনুলিপি ইতিমধ্যেই সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ আমরা চাই রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা দেখাক৷ সরকার চাইলে আমাদের সংগঠন মহার্ঘভাতার মামলার রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে গঠনমূলক ও ইতিবাচক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত৷’’