সিগন্যাল ঘিরে সংশয়টা থেকে যাচ্ছে। করমণ্ডল দুর্ঘটনায় সিগন্যাল ঘিরে একের পর এক রহস্যজনক তথ্য সামনে আসছে। দুর্ঘটনার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে সিগন্যালিং ব্যবস্থার মেরামতির কাজ চলছিল। তার পরেও ডিসট্যান্ট সিগন্যাল কীভাবে সবুজ হল, এখানেই উঠছে প্রশ্ন। গাফিলতি ঠিক কার?
২ জুন সন্ধ্যা ৬ টা বেজে ৫১ মিনিটে খান্তাপাড়া ও ইব স্টেশন পার হওয়ার পরই দুর্ঘটনার পথে এগোচ্ছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তখনও গতি কমানোর কোনও বার্তা চালকের কাছে পৌঁছয়নি। বাহানগা বাজার ঢোকার আগে হোম সিগন্যালও সবুজ ছিল। যদি সিগন্যালিংয়ের সমস্যা না থাকলে রুট ইন্ডিকেশন সিগন্যাল হলুদ থাকার কথা ছিল। সেক্ষেত্রে কিছুটা দূর থেকে ই করমণ্ডলের গতি কমানো উচিত ছিল।
• করমণ্ডলের গতি ১৫-৩০ কিমিতে নামিয়ে আনা উচিত ছিল
• বদলে ঘণ্টায় ট্রেনের গতিবেগ ছিল ১২৮ কিমি
• ট্রেনটি মেন লাইন ছেড়ে লুপ লাইনে ঢুকে পরে
• লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লৌহ আকরিক ভর্তি মালগাড়িকে ধাক্কা মারে
করমণ্ডল দুর্ঘটনা ঘিরে প্রশ্ন উঠছে একাধিক। সিগন্যালের রহস্যজনক ব্যর্থতাকে মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা কীভাবে এত বড় ধাক্কা খেল সেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। প্রাথমিক তদগন্তের ইঙ্গিত, করমণ্ডল লাইনের পয়েন্ট ঘোরানো ছিল লুপের দিকে। রেল সূত্রের খবর, করমণ্ডল এক্সপ্রেস বাহানগা বাজারে ঢোকার ঠিক দুই ঘণ্টা আগে লেভেল ক্রসিংয়ের কাজ চলছিল।
• বিকেল ৪টে ৩৫ নগাদ একটি লেভেল ক্রসিং গেটের বুম পাল্টে আধুনিক ইলেকট্রনিক ব্যুম ব্যারিয়ার বসানো হয়
• সন্ধ্যা ৬ টা ৩৫ নাগাদ মেন লাইন ফাঁকা রাখাতে মালগাড়িকে লুপ লাইনে সরানো হয়
এই পরিস্থিতিতে ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় লেভেল ক্রসিংয়ের গেট ঠিকমতো বন্ধ না হলে ট্রেন সিগন্যালই পায় না। তাই প্রশ্ন উঠছে, লেভেল ক্রসিংয়ের কাজ শেষে সিগন্যালিং বিভাগের আধিকারিকরা কি ইন্টারলকিং সিস্টেম ভালো করে কাজ করছে কি না তা দেখেছেন? মনে করা হচ্ছে, গোটা লাইনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা সঠিক ভাবে পরীক্ষা করাই হয়নি। লেভেল ক্রসিংয়ের বুমের কাজ যখন দুঘণ্টা আগেই শেষ হয়, তখন পরোখ করার প্রয়োজন ছিল ইন্টারলকিং সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করছে কিনা। সিগন্যালের হলুদ ও সবুজ সংকেত সঠিক ভাবে আসছে কিনা। করমণ্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইনে ঢুকল সবুজ সিগন্যাল পেয়ে। যা আসলে হয় আধিকারিকদের গাফিলতি, নয় তো আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে অন্তর্ঘাতের।