সিগন্যাল ঘিরে যখন রহস্য বাড়ছে, তখন করমণ্ডল দুর্ঘটনা ঘিরে অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চলছে। সিবিআইয়ের তদন্তও সেই দিকে এগোচ্ছিল। অথচ সিগন্যালিং গাফিলতির যে তথ্য সামনে আসছে, সেখানে স্টেশন মাস্টার থেকে রেল আধিকারিকদের অসতর্কের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেই সূত্র ধরেই সিবিআই আটক করল মোট পাঁচ জনকে। এরা প্রত্যেকেই রেল কর্মী।
• গ্রেফতার বাহানগা বাজারের অ্যাসিসটেন্ট স্টেশন ম্যানেজার
• গ্রেফতার এক টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ, গেটম্যান
• প্যানেল রুমের দুজন
রবিবার রাতেই তাদের আটক করে খুরদা রোডে সিবিআইয়ের অস্থায়ী অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। সূত্রের খবর, ধৃতদের বক্তব্যের মধ্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। রেল এতদিন দাবি করে এসেছে, রেলকর্মীদের গাফিলতি নয় বরং এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে অন্তর্ঘাতই। কিন্তু, তদন্তে নেমে বিষয়টি অন্য দিকেই যায়। সিগন্যালিং ঘিরে যে সংশয় প্রথম থেকেই তৈরি হয় সেই সন্দেহের মাটি খুড়তেই সামনে আসে বেশ কয়েকটি বিষয়।
তাই দুর্ঘটমার দিন রেলের কোন কর্মী কর্তব্যে ছিলেন তার তালিকা সিবিআই তৈরি করে। সিবিআই জানতে পারে,
• রিলে বক্স থেকে ইন্টারলকিং সিস্টেম বদলানো হয়েছে বলেই করমণ্ডল লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল
• দুর্ঘটনার দুই ঘণ্টা আগে লেভেল ক্রসিংয়ের কাজ চলছিল
প্রথমেই ইন্টারলকিং সিস্টেম নিয়ে প্যানেল রুমে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারের ভূমিকা ঘিরে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তারপরেই লেভেল ক্রসিংয়ের কাজ ঘিরে সংশ্লিষ্ট গেট ম্যানের উপরও প্রশন উঠছে। বিস্তারিত সব তথ্য নেওয়ার পরই মোট পাঁচ রেল কর্মীকে আটক করল সিবিআই। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাদের কল লিস্ট। কে কতক্ষণ ধরে দুর্ঘটনার দিন ফোনে কথা বলেছিলেন সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ, জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচ জনই একে অপরের উপর দোষ দেওয়া শুরু করে। সিবিআইয়ের দাবি, গেটম্যান কার্যত মেনেই নিয়েছে লেভেল ক্রসিংয়ের কাজ শেষ হওয়ার পর প্যানেল রুম পর্যন্ত সেই খবর পৌঁছয়নি। পয়েন্টে সমস্যা থাকা সত্ত্বেও সে দিকে লক্ষ্য দেওয়া হয়নি। অর্থাত্, সেদিনের একটা গাফিলতির ছবি সামনে আসছে। সিবিআইয়ের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে আরও নয় জন রেল কর্মী।