নয়াদিল্লি: ২০১৯-এর শেষ লগ্ন৷ বিশ্বজুড়ে ত্রাসের সঞ্চার করল ভয়ঙ্কর এক অতিমারি৷ এর পর টানা দু’বছর দেশে দেশে চলেছে মৃত্যু মিছিল৷ এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি পৃথিবীর ইতিহাসে হাতেগোনা৷ করোনার সেই রেশ এখনও কাটেনি। তবে বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টা আর রাষ্ট্রনায়কদের দূরদর্শিতায় অনেকটাই স্বাভাবিক করোনা পরিস্থিতি৷ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে মারন ভাইরাস। কেটেছে ভয়ও। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়।
২০২০ সালের গোড়া থেকে ভারতে হু হু করে বাড়তে শুরু করে কোভিড সংক্রমণ৷ তার পর থেকে দেশের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এই মারন ভাইরাসে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষেরও বেশি৷ ১৪০ কোটির দেশে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দেওয়াটা ছিল সত্যিই চ্যালেঞ্জিং৷ সংক্রমণ রুখতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো লকডাউনকেই ঢাল হিসাবে বেছে নেয় ভারতও৷ টিকা আবিষ্কারের পর কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির তৎপরতায় ব্যাপক হারে টিকাকরণ করা হয়। মোক্ষম অস্ত্রে অনেকটাই কাবু করোনা। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু জানিয়েছে, করোনা নিয়ে যে মারাত্মক উদ্বেগ ছিল, সেটা আর নেই। পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ভারতীয় বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকদের অভিমত কী? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য এই প্রসঙ্গে মুখোমুখি হয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের। করোনা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি৷
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনা প্রায় এনডেমিক পর্যায়ে চলে এসেছে। তবে পরিস্থিতির উপর কড়া নজরদারি এখনও চলবে৷ কিন্তু, এনডেমিক পর্যায় আসলে কী? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যখন কোনও ভাইরাস থিতু হয়ে যায়, তার সংক্রমণ আর মারাত্মক আকারে বাড়তে পারে না৷ সেই ভাইরাস নিয়ে বিশেষ উদ্বেগও থাকে না। এই সংক্রমণকে এনডেমিক বলা যেতে পারে।
এনডেমিক মানে কি? এই স্তরে কি ভাইরাস সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে? তেমনটা কিন্তু বলা যায় না। বরং এই ভাইরাস বহাল তবিয়তেই বাতাসে মিশে থাকবে। তবে সংক্রমণের তীব্রতা আর থাকবে না। ফলে ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির ভোগান্তি অনেকটাই কম হবে। এই সময় বেশির ভাগ মানুষের শরীরেরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। একেই বলা হয় এনডেমিক পর্যায়।
তবে এখনও সতর্ক থাকতে হবে৷ তেমনটাই জানিয়ে মণ্ডব্য৷ কিন্তু কেন? এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের ২০০-টিরও বেশি ভ্যারিয়েন্ট বা রূপ সম্পর্কে জানা গিয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্টগুলির কোনও কোনওটি মারাত্মক ভাবে আঘাত হেনেছে, কোনও কোনওটি তুলনায় দুর্বল থেকেছে। আগামী দিনেও করোনার আরও নতুন রূপের দেখা দেবে। এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা প্রায় নিশ্চিত৷ তার মধ্যে কোনও ভ্যারিয়েন্ট যে আবার নতুন করে মারাত্মক আকার নেবে না, সেই নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারে না৷ সেই কারণেই ভারতের বিজ্ঞানীরা এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এই বিষয়টিকে হালকা ভাবে নিতে নারাজ৷ তেমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>