কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার ‘অধিকার’ বদলে যাচ্ছে ‘দয়ার দানে’?

কলকাতা: অবশেষে বেতন কমিশনের সুপারিশ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রথম দফায় যে রিপোর্ট এসেছে তা গত শুক্রবার পড়ে শোনান মুখ্যমন্ত্রী৷ জানিয়ে দেন, আগামী বছর পয়লা জানুয়ারি থেকে বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা যায় কি না, তা ভেবে দেখবেন৷ তবে বর্ধিত হারে বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা হলেও এরিয়ায় নিয়ে রয়ে গিয়েছে ধোঁয়াশা৷ মহার্ঘ ভাতার সুবিধায় বেশ

কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার ‘অধিকার’ বদলে যাচ্ছে ‘দয়ার দানে’?

কলকাতা: অবশেষে বেতন কমিশনের সুপারিশ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রথম দফায় যে রিপোর্ট এসেছে তা গত শুক্রবার পড়ে শোনান মুখ্যমন্ত্রী৷ জানিয়ে দেন, আগামী বছর পয়লা জানুয়ারি থেকে বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা যায় কি না, তা ভেবে দেখবেন৷ তবে বর্ধিত হারে বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা হলেও এরিয়ায় নিয়ে রয়ে গিয়েছে ধোঁয়াশা৷ মহার্ঘ ভাতার সুবিধায় বেশ কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে বলে খবর৷

ঠিক কীভাবে কর্মীদের অ্যাকাউন্টে মহার্ঘ ভাতা তুলে দেবে রাজ্য? সংবাদমাধ্যমে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার জানিয়েছেন, পে কমিশনের সঙ্গে এখন মিশে যাবে মহার্ঘ ভাতা৷ এই মুহূর্তে রাজ্যের কর্মীরা ১২৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পান৷ অভিরূপ বাবু জানিয়েছেন, বেতন কমিশনের সঙ্গে মহার্ঘ ভাতা মিশিয়ে দেওয়া হবে৷ নতুন বেতন কাঠামোর চালু হওয়ার পর পর যদি ফের মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা করা হয় তাহলে মূল বেতনের সঙ্গে তা পাওয়া যাবে৷ আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক৷

রাজ্যের বেতন কমিশনের পিছনে অন্য কৌশল দেখছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ৷ এই সঙ্গে শিক্ষক তন্ময় ঘোষ বলেন, ‘‘এবার অত্যন্ত সুকৌশলে রাজ্য সরকার পে কমিশনকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে, AICPI অনুসারে DA প্রদান আর বাধ্যতামূলক নয়৷ অর্থাৎ কেন্দ্রীয় হারে DA দেওয়া বাধ্যবাধকতা থেকে রাজ্য সরকারকে মুক্ত করল কমিশন৷ রোপা ২০১৯ অনুযায়ী মহার্ঘভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে এই AICPI ক্লজটা থাকার জন্যই স্যাটের রায় কর্মচারীদের পক্ষে গিয়েছিল৷ এবার তাই আঁটঘাট বেঁধে সচেতনভাবেই এই অংশটা তুলে দিয়েছে কমিশন৷ হয়ত বা রাজ্য সরকারের অলিখিত নির্দেশে৷ স্যাটের ঐতিহাসিক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ভয় পেয়ে৷ ফলে, স্যাটের রায়কে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মহার্ঘ ভাতাকে ‘কর্মচারীর অধিকার’ থেকে নিঃশব্দে ‘সরকারের দানে’ পরিণত করল কমিশন তথা সরকার৷ এবার সরকার তার ইচ্ছে মতো অ্যাড হক ভিত্তিতে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করতে পারবে৷ ২০০৯ সালের রোপা আর ২০১৯ এর প্রস্তাবিত সম্ভাব্য রোপার মধ্যে এই পার্থক্যটা প্রণিধাণযোগ্য, যা ভবিষ্যতে কর্মচারী-বঞ্চনাকে অন্য মাত্রা দেবে বলেই মনে হয়৷’’

তাঁর আরও দাবি, ‘‘এই রাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করে অভিরূপবাবু কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারি হিসাবে AICPI অনুসারেই মহার্ঘভাতা পাচ্ছেন৷ অথচ সেই রাজ্যের সরকারী কর্মচারীদের জন্য তিনিই আবার নিদান দিচ্ছেন, এখানে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ভিত্তি হিসাবে রাজ্য সরকারের AICPI মেনে চলার দরকার নেই৷ কী নগ্ন দ্বিচারিতা! সব থেকে মজার কথা বিষয়, কীসের ভিত্তিতে তাহলে সরকারী কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হবে সেটা তিনি চার বছর ধরেও বার করে উঠতে পারলেন না৷ বললেন, এটা না কি সরকারই ঠিক করবে৷ বুঝুন কাণ্ড৷ কমিশন পুরোপুরি রাজ্য সরকারের মুখপত্রের মতো কাজ করছে৷ একজন পেশাদার মানুষের কাছে এমন অপেশাদারিত্ব ও মেরুদন্ডহীনতা আশা করা যায় না৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + eight =