নয়াদিল্লি: দুপুর ২টো বেজে ৩৫ মিনিট৷ পৃথিবীর মাটি ছাড়িয়ে চাঁদের পথে পাড়ি দেয় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩। মাটি থেকে ১১৪.৮ কিলোমিটার উপরে উঠতেই পেলোড আলাদা হল। এর পরেই ধীরে ধীরে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টান কাটিয়ে চাঁদের কক্ষপথের দিকে উড়ে যাবে চন্দ্রযান।
ধীরে ধীরে একটার পর একটা ধাপ পেরিয়ে চাঁদের পথে এগিয়ে চলেছে চন্দ্রযান-৩। ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন ঠিক ঠাক কাজ করছে৷ আপাতত সব কিছু ঠিকই চলছে৷ ইসরোর এই চাঁদের সফরের কেন্দ্রে রয়েছে এলভিএম-৩ রকেট। যা চন্দ্রযান ৩ কে শক্তি জোগাবে এবং পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে পৌঁছে দেবে। এর আগেও বহুবার কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের সময় এলভিএম-৩ রকেট ব্যবহার করা হয়েছে। একেই বলা হয় ভারতীয় রকেটের ‘বাহুবলী’ ৷ রকেটটি লম্বায় প্রায় ৪৩.৫ মিটার। উচ্চতায় দিল্লির কুতুব মিনারের অর্ধেক হবে। এটি ত্রিস্তরীয় উৎক্ষেপণ যান৷ এর দুটি স্তরে রয়ছে কঠিন জ্বালানি এবং একটি স্তরে মজুত রয়েছে তরল জ্বালানি। কঠিন জ্বালানি ১২৭ সেকেন্ড ধরে জ্বলে। উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ডের মধ্যে জ্বলতে শুরু করে তরল জ্বালানি। সেটি ২০৩ সেকেন্ড ধরে রকেটটিকে চালনা করে। চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নাম ‘বিক্রম’ এবং রোভারের নাম ‘প্রজ্ঞান’। সব কিছু ঠিক থাকলে ৪০ দিন পর, আগামী ২৩ থেকে ২৪ অগাস্টের মধ্যে চাঁদের বুকে অবতরণ করবে চন্দ্রযান ৩। ‘ইসরো’র তৈরি ‘জিও-সিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল’ (জিএসএলভি)-মার্ক-৩ যাতে সফল ভাবে চাঁদের মাটিতে ল্যান্ড করতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷
চন্দ্রযান ৩ ল্যান্ডারে এবার বাড়তি জ্বালানি রাখা হয়েছে। ইসরোর বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি গতিবেগে কোনও সমস্যা দেখা দেয় বা চাঁদের পিঠে নামতে দেরি হয়, তাহলেও যাতে পর্যাপ্ত জ্বালানি থাকে আকাশে বাড়তি সময় চক্কর কাটতে পারে। প্রয়োজনে বিকল্প কোনও জায়গাতেও নামতে পারে ল্যান্ডার বিক্রম।