কলকাতা: সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির ঘোষণায় আদতে লাভবান হচ্ছে রাজ্য সরকার৷ বাড়তি খরচ নয়, বেতন কমিশন কার্যকর করতে ‘একটি পয়সাও আপাতত খরচ হচ্ছে না রাজ্যের৷ তথ্য দিয়ে এবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশ্যে আনল রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভমেন্ট এমপ্লয়িজ৷
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘‘গত ১৩ তারিখ নেতাজী ইন্ডোরে মাননীয়া বেতন কমিশনের একটি অসপষ্ট রিপোর্ট পড়ে শুনিয়েছেন৷ সেখানে তিনি বলেছেন, নয়া বেতন কমিশন লাগু করতে, সরকারের ১০ হাজার কোটির কিছু বেশি টাকা খরচ হবে৷ অর্থাৎ খরচের হিসবটা তিনি আগেই কষে নিয়ে এসেছেন৷ কিন্তু আমরা কনফেডারেশন বলি, বেতন কমিশন দিতে সরকারের একটি পয়সাও আপাতত খরচ হবে না বরং ওই ১০ হাজার কোটি খরচ হওয়ার পরেও সরকারের পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি লাভ থাকবে৷ ব্যাপারটা শুনে অবাক হলেন তো? হওয়ারই কথা৷’’
পরিসংখ্যান তুলে ধরে সরকারি কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, ‘‘সরকারের ভাওতাবাজী মুখবুজে সহ্যকরলে আমার ক্ষতি৷ আপনার ক্ষতি৷ আগামী প্রজন্মের ক্ষতি৷ আপনারা এই সত্য উদঘাটনের জন্য ফিনান্সের ওয়েব সাইডে গিয়ে বাজেট প্রিভিউর বাজেট পাবলিকেশন নং ৯ খুলুন৷ এবার দেখুন ‘Budget at a glance (Recept)’ কী বলা আছে৷’’
উদাহরণ দিয়ে মলয়বাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘‘২০১২-২০১৩ অর্থবর্ষে রাজ্য কর্মচারীদের বেতন ও পেনশন খাতে সরকার ৪০,৭৬৬.৯৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন৷ এর অর্থ হল ওই টাকা সরকারের দেওয়ার ক্ষমতা ছিল৷ কিন্তু সরকার দেয়নি৷ কারণ, ওই বছর সরকারের Revised Budget খরচ হয়েছিল ৩৯,৭৮৬.৮৭ কোটি৷ এবং নির্দিষ্ট খরচ হয়েছিল ৩৯,৯৭৯.০৬ কোটি টাকা৷ অর্থাৎ ওই অর্থবর্ষে সরকারের লাভ ১,৩৮৭.৮৯ কোটি টাকা৷ অর্থাত সরকারের কোষাগারে জমা আছে৷’’
তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, ‘‘এবার লক্ষ্য করুন, ২০১২-১৩ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে মাত্র ৬ বছরে আমাদের না দেওয়ার টাকার পরিমাণ ১৫,১২৯.১৭ কোটি টাকা৷ সরকারের এহেন সঞ্চয় কীভাবে হল? প্রথমত, নিদিষ্ট সময়ে মহার্ঘ ভাতা না দেওয়া৷ দ্বিতীয়ত, নিদিষ্ট সময়ে প্রমোশন না দেওয়া৷ তৃতীয়ত, স্থায়ীপদে কর্মী নিয়োগ না করা৷ তাহলে আমরা কি বলতে পারিনা? সরকার আমাদের বছরের পর বছর বঞ্চিত করে, আমাদের টাকা মেরে সেই সঞ্চিত অর্থ দিয়েই বেতন কমিশন লাগু করছেন? এরপরও মেরে দেওয়া পাঁচ হাজার কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হয়ে থাকবে৷’’