মণিপুর-কাণ্ডে সংসদে মোদী মুখ না খোলায় লাভ হচ্ছে বিরোধীদের? জল মেপে তবেই মুখ খুলবেন প্রধানমন্ত্রী?

মণিপুর-কাণ্ডে সংসদে মোদী মুখ না খোলায় লাভ হচ্ছে বিরোধীদের? জল মেপে তবেই মুখ খুলবেন প্রধানমন্ত্রী?

নয়াদিল্লি: মণিপুরে হিংসা অব্যাহত। কিছুদিন আগে দুই মহিলার উপর যে নারকীয় নির্যাতন করা হয়েছে তাতে গোটা দেশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। ঘটনায় নতুন করে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে বিরোধীরা। আর সেই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছিলেন,  “মণিপুরের ঘটনা যে কোনও সভ্য সমাজের জন্য লজ্জাজনক। এই ঘটনা গোটা দেশকে অপমানিত করেছে। ১৪০ কোটি দেশবাসীকে লজ্জিত হতে হয়েছে।” এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছিলেন,  “ভয়ঙ্কর রকমের সংবিধান লঙ্ঘন। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যদি সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ না করে আমরা করব।”

এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের দাবি অবিলম্বে মণিপুর কাণ্ড নিয়ে সংসদে বক্তব্য রাখতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। যদিও সে রাস্তায় সরকার হাঁটছে না বলেই খবর। প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে বক্তব্য রাখবেন। কিন্তু তা মানতে রাজি নয় বিরোধীরা। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতাদের দাবি, এ বিষয়ে মুখ খুলতে হবে প্রধানমন্ত্রীকেই। উল্টোদিকে নিজের দাবিতে অনড় সরকারপক্ষ।

তাই প্রশ্ন উঠছে, প্রধানমন্ত্রী মুখ না খোলায় বিরোধীরা কি বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে যাচ্ছে? এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মুখ খুললে কি এমন অসুবিধা হতো বিজেপির? সেখানে মোদি মুখ না খোলায় বিরোধী জোট আরও হাওয়া পাচ্ছে বলেই রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। অর্থাৎ মণিপুর ইস্যুতে আরও বেশি করে এককাট্টা হচ্ছে বিরোধীরা। যতদিন না পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সংসদে বিবৃতি দেবেন, ততদিন বিরোধীদের চাপ বাড়ানোর রাজনীতি চলতেই  থাকবে। তাতে নিঃসন্দেহে বিরোধী জোট দিন দিন আরও বেশি করে গতি পাবে।

নয় বছরের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বলার মতো কোনও দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসেনি। তাই এতদিন ধরে ধর্মীয় জিগির তোলার অভিযোগের পাশাপাশি গতানুগতিক নানা অভিযোগ তুলেই ক্ষান্ত থেকে গিয়েছে বিরোধীরা। কিন্তু মণিপুরে টানা হিংসা যখন চলছে সেই সময় যেভাবে দুই মহিলার উপর নারকীয় অত্যাচার করা হয়েছে তাতে গোটা বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে। আর তখন থেকেই এ বিষয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতির দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা।

রাজনৈতিক মহল মনে করে এক্ষেত্রে অবশ্যই মোদির বিবৃতি দেওয়া উচিত। সারা বছর ধরে ছোটখাট যে কোনও বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত টুইট করে থাকেন। অথচ উত্তর-পূর্ব ভারতের পাহাড়ি রাজ্য মণিপুরে জাতি দাঙ্গায় মৃত্যু মিছিল শুরু হওয়ার আড়াই মাস পরেও নিশ্চুপ ছিলেন মোদি। কেন এই নীরবতা? কেন প্রধানমন্ত্রী মৌন হয়ে গিয়েছেন? এ প্রশ্ন বহুদিন ধরেই উঠতে শুরু করেছে। এই আবহের মধ্যে মোদি সংসদে মণিপুর কাণ্ড নিয়ে বিবৃতি না দিয়ে বিরোধীদের হাত কার্যত শক্ত করছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই বিষয়টি নিয়ে মোদি তাঁর অবস্থান বদলান কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − five =