গুয়াহাটি: জাতীয় নাগরিকপঞ্জি চালু করে একলপ্তে ১৯ লক্ষ মানুষকে বেঘর করেছে অসীম সরকার৷ রাতারাতি ১৯ লক্ষ মানুষকে রাষ্ট্রহীন করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পর এবার চাকরি ক্ষেত্রে নয়া বিধি-নিষেধ কার্যকর করতে চলেছে অসীম সরকার৷ একই সঙ্গে পরিবর্তন করা হয়েছে ভূমি সংস্কার নীতি৷ আর এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷
অসম মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব পাস করিয়ে সাফ ঘোষণা করা হয়েছে, দুইয়ের বেশি সন্তান হলে সরকারি চাকরি পাওয়া যাবে না৷ অসম মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত ২০২১ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে৷ ২০১৭ সালের এই প্রস্তাব খতিয়ে দেখে সরকারি চাকরিতে দুই সন্তানের পিতা-মাতার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে৷
কিন্তু দুই সন্তানের বেশি হলে সরকারি চাকরিতে কেন বিধি-নিষেধ আনা হল? সে বিষয়ে অসম সরকারের যুক্তি, যে হারে অসমে অনুপ্রবেশ ও জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে কমছে জাতীয় সম্পদ৷ বাড়ছে চাহিদা৷ চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় সমস্যায় পড়ছেন অসমের ভূমিপুত্ররা৷ আর এই কারণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকারি চাকরিতে দুই সন্তানের বেশি হলে চাকরি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ নয়া এই সিদ্ধান্তে জারি হয়েছে বিতর্ক৷
সরকারি চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও স্রেফ দুই সন্তান জন্ম দেয়ার অপরাধে কি তাঁদের বঞ্চিত করার ছাড়পত্র দিচ্ছে রাষ্ট্র? দুই সন্তান জন্ম দেওয়ার অপরাধে যদি সরকারি চাকরি না জোটে, তাহলে কীভাবে সুরক্ষিত হবে সেই সন্তানদের ভবিষ্যৎ? তার নিশ্চয়তা কি দেবে রাজ্য? সন্তান জন্ম দেওয়ার অপরাধে যদি আর্থিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করে রাষ্ট্র, তাহলে ভবিষ্যতে বড় সংকটের মুখে পড়তে চলেছে অসম৷ আগাম কোনও সচেতনতা বা সতর্কবার্তা ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত নতুন করে বিদ্রোহের জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
অন্যদিকে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভূমি সংস্কার নীতিতেও বদল আনা হয়েছে৷ ভূমিহীনদের বাড়ি তৈরি ও কৃষিকাজের জন্য ভূমিহীন কৃষিকাজের জন্য তিন বিঘা জমি দেওয়া হবে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷