কলকাতা: অনশনরত পার্শ্বশিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ৷ আজ পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের ডাকা অনশন ও ধর্না মঞ্চে হাজির হয়ে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নবান্নের বিরুদ্ধে ফের বিদ্রোহ ঘোষণা করেন দিলীপ ঘোষ৷ একই সঙ্গে শীত অধিবেশনে পার্শ্বশিক্ষকদের সমস্যা তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছেন দিলীপ৷ রাজ্যের ঘুম ভাঙাতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে কথা বললেন বলেও আশ্বাস বিজেপি সাংসদের৷
অনশনরত শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আজ আপনাদের আন্দোলন করার জন্য আদালত থেকে অধিকার ছিনিয়ে আনতে হচ্ছে৷ বাংলার গণতন্ত্রর অবস্থা এটাই৷ বাংলার গণতন্ত্রণের মেরুদন্ড ভেঙে পড়েছে৷ আজ বাংলার মানুষ খেতে না পেলেও তাঁদের সন্তানকে স্কুলে পাঠান৷ এটাই বাংলার গর্ব৷ কিন্তু আজ এই শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যা করছে তা লজ্জাজনক৷’’
দিলীপের আরও দাবি, সমস্যা থাকতেই পারে৷ কিন্তু শিক্ষকরা উপযুক্ত সম্মান পাবে না তা কখনোই কাম্য নয়৷ প্রতিবাদ করলেই পুলিশ লাঠিপেটা করছে৷ এই সমস্ত ঘটনা পরিবর্তন হওয়ার প্রয়োজন৷ শিক্ষকদের দায়িত্ব পড়ুয়াদের তৈরি করা৷ কিন্তু, আজ বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে৷ সমস্ত স্তরের শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন৷ সমস্যা রয়েছেন৷ শিক্ষকদের সমস্যা থাকলে তা সরকার যদি বুঝিয়ে বলে, তা তারা শুনবে না তা নয়৷ তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে বিষয়টা দেখা উচিত৷’’
রাজ্যের বেতন কমিশন ইস্যুতে খোঁচা দিয়ে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘সারাদেশে সপ্তম বেতন কমিশন চালু হয়েছে৷ আর রাজ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশন ভবিষ্যতের গর্ভে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী বছরের জন্য৷ আজ বাংলায় চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষক সবাই আক্রান্ত৷ সবাইকে ধরে পেটানো হচ্ছে৷ এই সমস্ত দেখে মনে হয়, বাংলায় কি গণতন্ত্র আছে? শান্তি আছে? কারা পুলিশকে মারতে পাচ্ছে, তা আমরা জানি৷ মুখে গণতন্ত্রণের বড় বড় ভাষণ, আজ কার্যক্ষেত্রে কী তা সবাই দেখতে পাচ্ছে৷’’ আরও বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী বলছেন কেন্দ্রের থেকে টাকা দিয়ে আসতে৷ আমরা বলছি, শিক্ষামন্ত্রী তো ঘরবন্দি হয়ে আছেন৷ তাঁকে দিল্লি যেতে হবে না৷ শিক্ষামন্ত্রীর ঘুম ভাঙাতে আমি দিল্লিতে বিষয়টি তুলব৷ কেন্দ্রের ৬০ শতাংশ টাকায় যাতে কাটমানি না নেওয়া হয়, তা ব্যবস্থা করছি৷’’
শিক্ষামন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বিজেপি সভাপতির দাবি, ‘‘কেন্দ্র সরকার যা টাকা দেয়, তাই শিক্ষকদের বেতন সমস্যা হওয়ার কথা না৷ কিন্তু সেই টাকাও মেরে নেওয়া হচ্ছে৷ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কিছু লোকের, পার্টির ব্যক্তিগত মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন৷ প্রতিবাদ করলেই বারবার হুমকি দিচ্ছেন৷ আমাদের পশ্চিমবাংলার শিক্ষামন্ত্রী সবথেকে অসহায়৷ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে উল্টোটা বলেন তিনি৷ আমার মনে হয়, শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে মানবিক ভাবে বিবেচনা করতে হবে৷ আমরা শিক্ষকদের পাশি আছে৷ সমস্যা সমাধান না হলে লড়াই চলবে৷’’