শিক্ষক অনশনে ‘আহারে বাংলা’য় সমস্যা! পুলিশকে কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের

কলকাতা: অনশনরত পার্শ্ব শিক্ষকদের জন্য সমস্যা হচ্ছে আহারে বাংলা অনুষ্ঠানে৷ এই সঙ্গে দু’টি কর্মসূচি সামাল দিতে সমস্যা পুলিশের৷ রাজ্য সরকারের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশকে কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ আজ কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তির কাছে পার্শ্ব শিক্ষকদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে৷ শিক্ষকরা তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে পারেন৷ তবে পুলিশকে এক্ষেত্রে সতর্ক

শিক্ষক অনশনে ‘আহারে বাংলা’য় সমস্যা! পুলিশকে কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের

কলকাতা: অনশনরত পার্শ্ব শিক্ষকদের জন্য সমস্যা হচ্ছে আহারে বাংলা অনুষ্ঠানে৷ এই সঙ্গে দু’টি কর্মসূচি সামাল দিতে সমস্যা পুলিশের৷ রাজ্য সরকারের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশকে কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷

আজ কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তির কাছে পার্শ্ব শিক্ষকদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে৷ শিক্ষকরা তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে পারেন৷ তবে পুলিশকে এক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে৷ প্রাণী বিকাশ উন্নয়ন দপ্তরের আহারে বাংলার অনুষ্ঠানের জন্য সেন্ট্রাল পার্কে প্রবেশ পথ খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে৷ তবে এ ক্ষেত্রে পুলিশ কোনভাবেই বল প্রয়োগ না৷ সেদিকে নজর রাখতে বলেছে আদালত৷ বিষয়টি সুচিন্তিত স্পর্শকাতর পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছে আদালত৷ কোনোভাবেই সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের প্রবেশপথ খালি করতে গিয়ে পুলিশ বল প্রয়োগ করবে না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ ফলে আপাতত পার্শ্বশিক্ষকরা তাদের অবস্থান চলিয়ে যেতে পারবেন৷

তবে, একদিকে যখন পার্শ্ব শিক্ষকেরা অনশন করছেন, ঠিক তখনই রাজ্য সরকার আয়োজিত আহারে বাংলার উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শিক্ষকদের একাংশ৷

চূড়ান্ত অচলাবস্থা৷ একদিকে শীতের কামড়, মাথার উপর শিশির, অন্যদিকে লাগামছাড়া মশার দাপট৷ খোলা আকাশের নীচে, রাজপথে আগলে দিন-রাত এক করে পড়ে রয়েছেন বাংলার কয়েক হাজার শিক্ষক৷ একাধিক প্রতিকূলতাকে জয় করে টানা এক ৯ দিন ধরে নিজেদের অধিকারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন পার্শ্ব শিক্ষকদের একাংশ৷ এই নিয়ে ৫ দিনে পড়ল শিক্ষকদের অনশন৷ কিন্তু অনশনে জোটেনি অ্যাম্বুলেন্স, পানীয় জল, শৌচালয়৷ বিকাশ ভবন চত্বরে যখন ভুখা পেটে রয়েছেন শিক্ষকরা, ঠিক তখন অনশন মঞ্চের অদূরে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আজ থেকে শুরু হচ্ছে আহারে বাংলা৷

সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় বাংলায় আবার বিশ্বের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে৷ আহারে বাংলায় এবার বঙ্গীয় খাদ্য উৎসব ২০১৯-এর উদ্বোধন হবে আজ সন্ধ্যা ছ’টায়৷ আগামী ২০নভেম্বর থেকে ২৪ নভেম্বর বেলা ১২ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিধান নগর মেলা প্রাঙ্গণে এই মেলা চলবে বলেও জানানো হয়েছে৷ মেলার উদ্বোধন করবেন খাদ্যমন্ত্রী৷ উপস্থিত থাকবেন কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী, দমকল মন্ত্রী ও বিধান নগর পুরসভার নতুন মেয়র৷ সভাপতিত্ব করবেন প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ৷ এবারের বিশেষ আকর্ষণ হিসাবে খাদ্য মেলায় থাকছে শহরের সেরা রেস্তোরাঁ, কিডস জোন, রিটেইল আউটলেট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷

রাজ্য সরকারের এই বঙ্গীয় খাদ্য উৎসব ঘিরে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনশনরত পার্শ্ব শিক্ষকদের একাংশ৷ তাদের অভিযোগ, শিক্ষকরা যখন তাঁদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে রাস্তায় বসে অনশন করছেন, তখন রাজ্য সরকারের এই ভুরিভোজের আয়োজন সত্যিই বাংলার ‘উন্নয়ন বৈষম্য’কে আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে৷ রাজ্যের এই আয়োজনের বিরুদ্ধে এবার অনশন মঞ্চ থেকেই নতুন করে বিদ্রোহের ডাক দিতে শুরু করেছেন পার্শ্ব শিক্ষকদের একাংশ৷

এই বিষয়ে পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘এটাই বাংলা৷ এটাই বাংলার উন্নয়ন৷ শিক্ষকরা রাস্তায় পড়ে আছেন, সেদিকে কারও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই৷ শিক্ষকদের পাঁচ দিনের অনশনে পানীয় জলটুকু দেওয়ার ব্যবস্থা করেনি প্রশান৷ অ্যাম্বুলেন্স, শৌচাগারও মেলেনি৷ আর একটু দূরেই রাজ্য সরকারের বিশাল খাদ্য মেলার আয়োজন আসলে উন্নয়নের বৈষম্যের প্রমাণ৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × four =