নয়াদিল্লি: ভারতের শহরগুলিতে বেকারত্বের হারে কিছুটা স্বস্তি মোদি সরকারের৷ অপ্রকাশিত একটি সরকারি রিপোর্ট খতিয়ে দেখে এমনটাই জানাল রয়টার্স৷ গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পতনের হার ৯.৩ শতাংশ৷ পরিসংখ্যান মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে এই সময়ের আগে পর্যন্ত বেকারত্বের হার ৯.৯ শতাংশের অনুপাতে চলতি বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিক হিসেব এই পতনের হার সর্বনিম্ন৷
বর্তমানে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারে পতনের জেরে, একের পর এক সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়া, কর্মী ছাঁটাই, সব মিলিয়ে সমালোচনায় জর্জরিত প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ত্রৈমাসিক হিসেব পাওয়া যায়নি৷ তার পরবর্তী সময় থেকে ২০১৮-র শেষ পর্যন্ত বেকারত্বের যে হার ছিল তার তুলনায় কিছুটা কম হলেও সাম্প্রতিক ত্রৈমাসিকের ৯.৩ অনুপাতে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হবে সেখানে শহরতলি বা গ্রামাঞ্চলের বেকারত্বের হার উল্লেখ করা নেই৷
তথ্য অনুসারে রয়টার্সের তৈরি নথিতে বলা হয়েছে, পরিসংখ্যান মন্ত্রকের বর্তমান সাপ্তাহিক স্ট্যাটাস-এর ভিত্তিতে যে হিসেব করা হয়েছিল তা এই সময়কালের আগের সাত দিনের অল্প সময়ের মধ্যে বেকারত্বের গড় চিত্র দেয়, অর্থাৎ নথি অনুযায়ী একজন ব্যক্তি যদি সেই সপ্তাহের মধ্যে কমপক্ষে ১ ঘন্টাও কাজ না করে তবে তাকে এক সপ্তাহে বেকার হিসাবে বিবেচনা করা হয়৷ বেকার১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীরা যা ভারতের প্রায় ১.৩ বিলিয়ন জনগণের এক-তৃতীয়াংশ – সেক্ষেত্রেও বেকারত্বের হার পূর্ব প্রান্তিকের ২৩.৭শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯.৫ শতাংশ হয়েছে, অর্থাৎ সামান্য কম৷
রয়টার্স দ্বারা পর্যালোচিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে গতবছরের প্রান্তিকে চাকরির মূল্যায়নে আরও বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সাপ্তাহিক স্ট্যাটাস পদ্ধতি অনুসারে বেকারত্বের হার হ্রাসের ক্ষেত্রে নিয়মিত মজুরির কর্মীদের মধ্যে কর্মসংস্থান এবং স্ব-কর্মসংস্থানকর্মীদের একাংশের বৃদ্ধি পেয়েছিল৷
মূলত শ্রমজীবীদের কাজে নিযুক্তির পরিমান ৩৬ শতাংশ কমে যাওয়ায় তার প্রভাব পড়ে বর্তমানে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে৷ চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির পরিমাণ ৫.৮ শতাংশ কমে গিয়ে বিগত চারবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছোয়৷ পরবর্তী ত্রৈমাসিকেও বৃদ্ধির হার ক্রমান্বয়ে আরও ৫ শতাংশ হ্রাস পায়৷
বিগত মে মাসে প্রকাশিত ২০১৭-১৮-র রিপোর্টের ভিত্তিতে বেকারত্বের হার ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল৷ পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়মিতভাবে পূর্ণাঙ্গ কাজের তথ্য প্রকাশ করছেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে৷ সবমিলিয়ে বেকারত্বের হারে এই স্বল্প পরিমাণ বৃদ্ধি কেন্দ্রীয় সরকারকে স্বস্তি দিলেও জনসাধারণের অস্বস্তি যে জিইয়ে রাখবে তার বলাই বাহুল্য৷