masala dosa
কলকাতা: চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের হ্যাংওভার এখনও কাটেনি৷ এরই মধ্যে শনিবার রবির রহস্যভেদে উড়ে গিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি মহাকাশযান আদিত্য-এল১৷ সব মিলিয়ে মহাকাশ নিয়ে এখন মাতোয়ারা গোটা দেশ৷ গত ২৩ অগাস্ট ইতিহাস লিখে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে সফট ল্যান্ড করে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। সেইসঙ্গেই বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে চন্দ্রজয়ের কৃতিত্ব ঝুলিতে পোড়ে ভারত৷ কিন্তু জানেন কি, ভারতের চন্দ্র অভিযানের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে মশলা দোসা এবং ফিল্টার কফি! হ্যাঁ, এমনটাই ইসরো সূত্রে খবর৷ অনেকেই বলছেন, এই দু’টি খাবার না থাকলে নাকি চন্দ্রযান-৩ হয়তো সফলই হত না। কিন্তু প্রশ্ন হল, কী ভাবে চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যের নেপথ্য কুশীলব হয়ে উঠল মশলা দোসা আর ফিল্টার কফি? এই দুই খাবারের সঙ্গে চাঁদের সংযোগই বা কোথায়?
অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে, ‘বার্বি’ বা ‘ওপেনহাইমার’-এর মতো হলিউডি ফিল্মগুলির চেয়েও কম বাজেটে কীভাবে চাঁদে পৌঁছে গেল ভারত? ইসরোর এই সাফল্যের চাবিকাঠি কী? ইসরোর চন্দ্র অভিযানের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত বিজ্ঞানী বেঙ্কটেশ্বর শর্মা এই রহস্য ফাঁস করেছেন। ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনিই অভিযানের সাফল্যের নেপথ্য কাহিনী সামনে নিয়ে এসেছেন। তাঁর কথায়, এই অভিযানকে সফল করে তুলতে ইসরোর প্রত্যেক সদস্যের সহযোগিতার প্রয়োজন তো ছিলই। সঙ্গে প্রয়োজন ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করার ক্ষমতা৷ এই দু’য়ের সংমিশ্রনেই সফল হত অভিযান। সেই কাজটাই করে দেখিয়েছে মশলা দোসা আর ফিল্টার কফি। কিন্তু, কী ভাবে?
বেঙ্কটেশ্বরের কথায়, দোসা আর কফি দিয়েই কর্মীদের অফিসে টেনে এনেছিল ইসরো। প্রতি দিন বিকেল ৫টা বাজলেই কর্মীদের বিনামূল্যে দোসা এবং কফি খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করেছিল কর্তৃপক্ষ। যাতে কর্মীদের মধ্যে কাজের উৎসাহ, অফিসের প্রতি ভরসা, আগ্রহ বাড়িয়ে তোলা যায়৷ নির্দিষ্ট সময়ের চেয়েও অনেকটা বেশি সময় সকলে অফিসে থেকেছেন এবং মন দিয়ে কাজ করে গিয়েছেন। কর্মীদেরা যখন নিরলস পরিশ্রম করছেন, তখন তাঁদের চাঙ্গা রেখেছে সুস্বাদু ফিল্টার কফি৷ আর পেট ভরিয়েছে মশলা দোসা।
ইসরোর চন্দ্রযান-৩ অভিযান সফল। স্বর্ণাক্ষরে ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়েছে ভারতের নাম৷ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রেখেছে ভারত। সেখানে ১০ দিন ধরে অনুসন্ধান চালানোর পর ‘ঘুম পাড়ানো’ হয়েছে রোভার প্রজ্ঞানকে। কারণ, চাঁদের রাত ঘনিয়ে আসছে৷ সূর্য উঠলে আবার তাকে জাগানো যায় কি না, সেটাই এখন দেখার। তবে এখনও কাজ করে চলেছে ল্যান্ডার প্রজ্ঞান৷
চাঁদ ছুঁলেও ইসরোর এই সফল নায়করা একেবারেই মাটির মানুষ। সাদামাটা জীবন৷ ঝুলিতে বিশাল কৃতিত্ব নিয়েই তাঁরা মাটিতে পা রেখে চলতে পছন্দ করেন৷ তাঁরা বড় বড় স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু তা সফল করার জন্য অতিরিক্ত বাজেট যাতে দেশের কোষাগারে চাপ না ফেলে, সেই দিকেও সদা নজর তাঁদের। ওয়াশিংটন পোস্টকে ইসরোর প্রাক্তন প্রধান, মাধবন নায়ার বলেন, “আমরা শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জিনিসের পিছনে ব্যয় করি। কিন্তু, আমাদের বিজ্ঞানীরা, ভারতের বা বিদেশের যে কোনও সংস্থার বিজ্ঞানীদের থেকে বেশি পরিশ্রম করেন।”