পিষছে পেশা, ছিবড়ে জীবন! কাজের জন্য জীবন? জীবনের জন্য কাজ? সমাধান কী?

পিষছে পেশা, ছিবড়ে জীবন! কাজের জন্য জীবন? জীবনের জন্য কাজ? সমাধান কী?

নয়াদিল্লি: যত সময় যাচ্ছে জীবন তত ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। এই ব্যস্ত জীবনে যদি কিছু থাকে তা হল একরাশ ক্লান্তি। সেই ক্লান্তি যেন পিছু ছাড়তে চায় না। শুধু মনে হয়, এমন একটা দিন দরকার, যেদিন সারাদিন ঘুমাবো। কেউ ডাকবে না। কোনক্রমে সেই দিন চলে এলেও,  ফ্রেশ ভাবটার স্থায়িত্ব বেশি দিন থাকে না। কয়েকদিন যাওয়ার পর ফের সেই ক্লান্তি চলে আসে। যার জেরে পরিবারকে সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না। দেখা দেয় বাড়ি আর কাজের জায়গায় ভারসাম্যের অভাব। যার জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আটের দশকের ছেলে-মেয়েদের। হ্যাঁ এই সমস্যা মূলত আট বা নয়ের দশকের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সব থেকে বেশি পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়।

চিকিৎসকরা আক্ষেপ করে বলেছেন, জীবনটা একেবারে তছনছ হওয়ার আগে কেউ পরামর্শ নিতে আসে না। মনের মধ্যে সারাক্ষণ একটা আশা ধিক ধিক করে জ্বলতে থাকে, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সব ঠিক তো হয় না, বরং এই ঘটনা মনোবিকারের আকার নিতে বেশি সময় লাগায় না। এই ধরনের মানসিক অবস্থাকে ডাক্তারি ভাষায় বার্ণ আউট বলে। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর থেকে বেরনোর পথ খুব সহজ। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, প্রথম দিকে এই পরিস্থিতিকে কেউ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চায় না। তারা মনে করে, এমনি এমনি ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে বের হতে গেলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হয়। মনোবিদদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। যদিও এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য চিকিৎসকদের সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। কাউন্সিলিংয়েই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জীবনযাত্রার সামান্য উন্নতি অথবা কিছুটা পরির্তন করলে খুব ভালো উপকার পাওয়া যায়। প্রতিটি কর্মীকে বুঝতে হবে, কাজের বাইরে এত বড় একটা পৃথিবী আছে, সেটা উপভোগ করতে হবে। বুঝতে হবে, কাজের চাপ বেড়ে গেলে কাজের মানও ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অফিসের বস, সহকর্মী ও কর্মীদের বুঝতে হবে, বেশিক্ষণ কাজ করা আসল বিষয় নয়। আসল বিষয় হল কি কাজ হয়েছে এবং সেই কাজের মান কেমন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের দেশের কর্মসংস্কৃতিতে সেই পরিবেশ এখনও গড়ে ওঠেনি। ফলে পেশা আর পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারছে না অনেকেই। বিষয়টি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে বার্ণ আউটের মুখে পড়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একটানা ১০ বছর চাপ নিয়ে কাজ করার পর থেকেই অনেকেই বার্ণ আউটের শিকার হয়ে পড়ছেন। এই বার্ণ আউট থেকে অফিসের কর্মীদের দূরে রাখতে গেলে, সেই বিষয়ে আসল কাজ অফিসের ম্যানেজমেন্টকে নিতে হবে। তাছাড়া কর্মীরা সকালে যোগব্যায়ামের পাশাপাশি শৃঙ্খলা জীবন যাপন করলে বার্ণ আউটকে কিছুটা সময় ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন। তবে একবার মনোবিকার বা বার্ণ আউটের কবলে পড়লে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + nine =