কলকাতা: সংবাদ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়তেই অবশেষে নড়েচড়ে বসল রাজ্য শিক্ষা দফতর৷ শিক্ষকদের বকেয়া বেতন বাড়ানোর বিষয়ে কড়া নির্দেশিকা জারি করছে শিক্ষা দপ্তর! জরুরি ভিত্তিতে স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশিকা দিয়েছে শিক্ষা দপ্তর৷ বকেয়া না মেটানো পর্যন্ত ছুটি নেওয়া যাবে বলেও কড়া বিধি জারি করা হয়েছে বলে বিকাশ ভবন সূত্রে খবর৷
সূত্রের খবর, শিক্ষকদের বেতন বেতন মিটিয়ে দেয়ার বিষয়ে শিক্ষা দপ্তরের তরফে জরুরি ভিত্তিতে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে৷ আজই শিক্ষকদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নয়া নির্দেশিকায়৷ আজই শিক্ষকদের ফেব্রুয়ারির বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা ছুটি নিতে পারবেন বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে বলে খবর৷ শিক্ষকদের বেতন মেটাতে আজই যা যা করণীয় তা সেরে ফেলার করা হবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ আজ দিন শেষে শিক্ষকদের বকেয়া বেতন বিভ্রাট মেটাতে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে৷ এই মর্মে স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় সভা-সমিতি করে দাবি করেন, তৃণমূল সরকারের আমলে শিক্ষকরা মাস পয়লা বেতন পান৷ কিন্তু রাজ্য সরকারের সেই কৃতিত্বকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়ে মাস পয়লা বেতন থেকে এখনও পর্যন্ত বঞ্চিত হলেন রাজ্যের কমপক্ষে দু’লক্ষ শিক্ষক৷ অভিযোগ, মাস পয়লা বেতন হয়নি না শিক্ষকদের৷ মার্চ মাসের ২ তারিখ হয়ে গেলেও অ্যাকাউন্টে এখনও ঢোকেনি বর্ধিত বেতনের টাকা৷ কেন বেতন পাননি শিক্ষকরা? তার খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷
অন্যদিকে, আজ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি(STEA)'র সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বিকাশ ভবনে শিক্ষা দপ্তরের ও অর্থ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন, যাতে পশ্চিম বাংলার সমস্ত জেলার শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীরা একইসঙ্গে দ্রুত ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পেয়ে যেতে পারেন৷ শিক্ষা দপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর গ্র্যান্ড ইন এড অলোক সরকার আশ্বাস জানিয়েছেন, আজি প্রতিটি জেলার ডিআই অফিসে বেতন ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে৷ আগামীকাল পশ্চিমবাংলার সমস্ত জেলার শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীরা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পেয়ে যাবেন৷
পরিবর্তনের সরকার আসার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের মাস পয়লা বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করে৷ এই নিয়ে বিশেষ কৃতিত্বের দাবি করে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু এই প্রথম আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগের মাসে বেতন বিভ্রাট দেখা দিল স্কুল শিক্ষকদের ক্ষেত্রে৷ ফেব্রুয়ারি মাসের বর্ধিত বেতন এখনও পর্যন্ত সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত শিক্ষকদের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি বলে অভিযোগ৷ বেতন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরা৷ বেতন পাননি প্রায় দু’লক্ষ বেশি শিক্ষক৷ কী কারনে বেতন বিভ্রাট, তা নিয়ে চূড়ান্ত ধোঁয়াশা তৈরি হয়৷ এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়৷
অভিযোগ, এই প্রথম তৃণমূলের জমানায় মাস কয়লা বেতন হল না৷ মার্চ মাসে আর্থিক বছর শেষ হওয়ার কারণে এপ্রিলের বেতন কিছুটা দেরিতে হয়৷ কিন্তু অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই বেতন বিভ্রাট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক৷আর সেই বিতর্ক মেটাতে জরুরি নির্দেশিকা জারি হয়েছে বলে সূত্রের খবর৷ এর আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, ‘‘কী কারণে ওঁরা পাইনি আমরা জানা নেই৷ আমরা তো বেতন ট্রেজারিতে পাঠিয়ে দিয়ে থাকি৷ কেন তাঁরা পেল না, বলতে পারব না৷ খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে৷ এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের খোঁজ নিতে হবে৷ তাদের প্রাপ্য তাঁরা নিশ্চয়ই পাবেন৷ একটু অপেক্ষা করে দেখুন৷ আমরা চাই ১ তারিখে বেতন হোক৷ রবিবার হলে ট্রেজারিতে বেতন আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ ট্রেজারিতে টাকা পাঠানো নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে বলুন৷ সে ক্ষেত্রে যদি কোনও অভিযোগ থাকে আমরা দেখে নেব৷ আমাদের দপ্তর থেকে টাকা সময়মতো পাঠানো হয়৷’’