করোনা কোপে চাকরি খোয়াতে পারেন এই সেক্টরের বহু কর্মী

করোনা কোপে চাকরি খোয়াতে পারেন এই সেক্টরের বহু কর্মী

9d0a8e235d9682df6b0ea3ce48c6a565

নয়াদিল্লি: করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন গোটা দেশ৷ ক্রমেই নিম্নমুখী অর্থনীতির সূচক৷ এই অবস্থায় গ্লোবাল ক্লায়েন্টদের পরিষেবা দিতে ইঁদুর দৌড়ে সামিল বিশ্বের তাবর তাবর আউটসোর্সিং সংস্থাগুলি৷
ব্যাংক থেকে শুরু করে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তর  ম্যানুফ্যাকটারার্স এবং ফার্মাসিউটিক্যালস সংস্থাগুলির ব্যাক অফিসের কাজ সামলায় ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি৷ এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংগঠন টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস৷ উদাহরণ স্বরূপ, টাটার ক্লায়েন্টদের তালিকায় রয়েছে সিটিব্যাংকের মতো সংস্থা৷ অন্যদিকে টাটার প্রতিদ্বন্দ্বী ইনফোসিস যুক্ত রয়েছে ফাইজারের সঙ্গে৷

ভারতে করোনা সংক্রমণ রুখতে ২১ দিনের জন্য  লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ বেশ কিছু রাজ্যে জারি হয়েছে কারফিউ৷ জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ সমস্ত দফতর৷ বেঙ্গালুরু বা পুণেতে এই সকল আউটসোর্সিং সংস্থাগুলিতে কর্মরত প্রায় ৯০০ জনের করোনা পজেটিভ৷ যার জেরে আইটি কোম্পানিগুলি তাদের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে৷ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসেও যাতে কাজের কোনও অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করতে নিজেদের নেটওয়ার্ক আরও উন্নত করে তুলেছে৷ এরই মধ্যে ক্লায়েন্টদের সাইবার নিরাপত্তা দিতে কিছু কর্মী যাতে অফিস যাওয়ার অনুমতি পান, তার জন্য তদবিরও করতে হয়েছে তাদের৷

টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেসের বার্ষিক আয় ২০ বিবিয়ম মার্কিন ডলার৷ ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা তাঁদের প্রায় ৪ লক্ষ কর্মীর মধ্যে ৮৫ শতাংশই বাড়ি থেকে কাজ করছেন৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইনফোসিসের ২ লক্ষ কর্মীর মধ্যে ৭০ শতাংশ ওয়ার্ক ফ্রম হোমে নিযুক্ত৷ ন্যাসকমের প্রাক্তন সভাপতি তথা প্রাক্তন সরকারি আইটি আধিকারিক আর চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘এটি ভারতীয় অর্থনীতির মুকুটে খচিত রত্ন৷’’ তিনি বলেন, এর আগেও সংকট এসেছে৷ তবে এটি সম্পূর্ণ পৃথক পরিস্থিতি৷ সেই পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে সংস্থাগুলি৷ সামগ্রিকভাবে বছরে ১৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করে এই সকল কোম্পানিগুলি৷

কিন্তু ভারতে লকডাউনের জেরে সমস্যায় পড়েছে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার সংস্থাগুলি৷ এই দেশগুলির অভ্যন্তরীণ পরিষেবার বা কল সেন্টারগুলি চালানোর জন্য নির্ভর করে আউটসোর্সিং সংস্থাগুলির উপর৷ আউটসোর্সিংয়ের উপর নির্ভরশীলতা কমানোর ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছে পশ্চিমী সংস্থাগুলি৷ গত সপ্তাহেই ভার্জিন মিডিয়া তাদের কল সেন্টারের জন্য ৫০০ জন কর্মী নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিল৷ যা ভারতের কাছে একটা ধাক্কা৷

মুম্বইয়ের জেএম ফিনানসিয়াল সংস্থার বিশ্লেষক পঙ্কজ কাপুর জানান, সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বেশিরভাগ আইটি সংস্থাগুলি কাজ করে চলেছে৷ প্রশ্ন হল এতে কি সমস্যা বাড়ছে না? বা ক্লায়েন্টরা কি খুশি?
এর উত্তরে তিনি বলেন, নিশ্চিতভাবেই তারা খুশি নন৷  আমার মনে হয় এই অবস্থায় কাজ বন্ধ রাখাই ভালো৷ না হলে ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হবে৷ কর্মীরা যাতে বাড়িতে বসে নিরাপদে কাজ করতে পারে তার জন্য নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে৷ অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য নন-ডিসক্লোজার চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছে তারা৷ ইনফোসিস জানিয়েছে, কর্মীদের যাতে বাড়ি থেকে কাজ করতে অসুবিধা না হয়, প্রয়োজনে তাঁদের হাই স্পিড ব্রডব্যান্ডও দেওয়া হয়েছে৷ আশা করা হচ্ছে,  দেশের উপর নেমে আসা এই সংকট কাটলেই ফের স্বমহিমায় ফিরে আসবে সংস্থাগুলি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *