কলকাতা: লাফিয়ে বাড়ছে করোনা৷ করোনার প্রভাব রুখতে ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে কেন্দ্র৷ ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি সঙ্গে দীর্ঘ লকডাউন, রাতারাতি বাড়িয়ে দিয়েছে বেকারত্ব৷ কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরে গিয়েছেন বহু শ্রমিক৷ লকডাউন ঘোষণা হতে না হতেই বেকারত্ব লাফিয়ে বেড়েছে৷ গত ২৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে বেকারত্বের হার ২৩ শতাংশ পেরিয়ে গিয়েছে, যা সর্বোচ্চ৷ একদিকে যখন লাফিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব, তখন নিয়োগ পরীক্ষায় সফল হয়েও মিলছে না নিয়োগপত্র৷ আর তাই নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বাংলার সফল চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে৷ বাড়ছে ক্ষোভ৷ খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ফেসবুক ওয়ালে গিয়ে এবার নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছেন শিক্ষামান্ত্রী নিজেও৷
দীর্ঘ মামলার জটে থমকে রয়েছে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ৷ কলকাতা হাইকোর্টে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ মামলার ভবিষ্যত এখনও ঝুলে রয়েছে৷ একদিকে মামলা, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, করোনা মহামারী, সবমিলিয়ে জেরবার উচ্চ প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ৷ বাড়ছে বেকারত্বের যন্ত্রণা৷ মহামারীর এই পরিস্থিতির মধ্যে এবার খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গিয়ে ক্ষোভ জনাতে শুরু করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এবার নিজের ফেরবুক পেজে চাকরিপ্রার্থীদের বড়সড় আশ্বাস দিলেন শিক্ষামন্ত্রী৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে শিক্ষামন্ত্রী নিজের ফেসবুক প্রোফাইল লেখেন, ‘‘আপনারা অনেকেই আমার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পোস্টের পর অন্য বিষয়গুলি নিয়ে মতামত দিচ্ছেন৷ আপার প্রাইমারি নিয়ে জানাই বিষয়টি বিচারাধীন সমাধানসূত্র থাকলেও এ মুহূর্তে তা করা সম্ভব হচ্ছে না৷ অতিথি শিক্ষকদের বিষয় ভেরিফিকেশন অনেক দূর এগোনোর পর বর্তমান সময়ে আটকে পড়েছে৷ যদিও কলেজগুলি যাদের নিয়োগ করেছিল তাদেরকে সেইভাবেই ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কারণ এগুলি ওই সময় কালে সরকারের অনুমোদন ছিল না৷ সংকট কেটে গেলেই এ বিষয়ে সমাধান সূত্র বের হবে৷ সবাই সুস্থ থাকুন ঘরে থাকুন৷’’
শিক্ষামন্ত্রী এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই চাকরিপ্রার্থী মহলে তুমুল কৌতূহল তৈরি হয়েছে৷ অনেকেই বলছেন, তাহলে কি আদালত ছাড়পত্র দিলেই কি উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার? কিন্তু, মামলার জট কবে কাটবে? তা নিয়ে রাজ্য সরকার কি কোন সদর্থক ভূমিকা পালন করবে? নাকি মামলার গেরোয় নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হবে৷ যদিও, করোনার জেরে অনুমতি ছাড়া কোন নিয়োগ করার ওপর বিধিনিষেধ জারি করেছে রাজ্য৷ এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে আদৌও উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ হবে কি না? সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷
অর্থ দপ্তরের অনুমোদন সাপেক্ষেই উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল ২০১৪ সালে৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে উচ্চপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে চলছে মামলা৷ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পাঁচ বছর পরও উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়নি অনিয়মের জেরে৷ গতবছর ৪ অক্টোবর চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ হলেও লাটে নিয়োগ৷ চলছে মামলা৷ ঝুলে রয়েছে ১৪ হাজার ৮৮ শূন্যপদ৷ অনিশ্চিত ৩০ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থীর ভাগ্য৷