দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে, বেকারত্বের যন্ত্রণায় পোস্টার বিদ্রোহ হবু শিক্ষকদের

দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে, বেকারত্বের যন্ত্রণায় পোস্টার বিদ্রোহ হবু শিক্ষকদের

কলকাতা: চোখ রাঙাচ্ছে করোনা৷ লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা৷ করোনা রুখতে দীর্ঘ লকডাউনের গেরোয় ঝুলছে কয়েক কোটি জনতার ভবিষ্যৎ৷ কাজ হারিয়ে বাড়িতে বসে গিয়েছেন লক্ষ শ্রমিক৷ আগামী মাসের বেতন মিলবে কি না তা নিয়েও রাতের ঘুম উড়েছে কর্মচারীদের একাংশের৷ গোটা বিশ্ব যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে, ঠিক তখনই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে বাংলার চাকরিপ্রার্থীদের বেকারত্বের যন্ত্রণা৷ দীর্ঘ ৭ বছর ধরে নানান কারণে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ থমকে৷ দীর্ঘ দিনের নিয়োগ বঞ্চনা অন্যদিকে করোনা মহামারী, জোড়া আক্রমণের বিরুদ্ধে এবার শেষ বারের মতো লড়াইয়ে নেমে প্রতীকী প্রতিবাদে সামিল দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাংলার চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ বাড়ি থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় তুলতে শুরু করেছেন বাংলার কয়েক হাজার হবু শিক্ষক৷

অর্থ দপ্তরের অনুমোদন সাপেক্ষে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল ২০১৪ সালে৷ উচ্চপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য টেট পরীক্ষা নেওয়া হয় ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট৷ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে৷ দীর্ঘ লড়াই আন্দোলন, গ্রেফতারি, পুলিশের মার, হেনস্থার পর গত বছর ২০১৯ সালে মাঝামাঝি সময়ে সফল চাকরিপ্রার্থীদের ভেরিফিকেশনের বিজ্ঞপ্তি জারি স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ পরে ওই বছর জুলাই মাসে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়৷ তখন থেকেই উঠতে থাকে প্রবল ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ৷ ‘দুর্নীতি’র আবহে প্রকাশিত হল মেধাতালিকা৷ ২০১৯ এর ৪ নভেম্বর৷ মেধাতালিকা চরম অনিময় তুলে দায়ের হয় মামাল৷ সেই মামলা এখনও চলছে৷ নিয়োগের উপর এখনও বহাল স্থগিতাদেশ৷ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৭ বছর কেটতে চললেও উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়নি অনিয়মের জেরে৷ গতবছর ৪ অক্টোবর চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ হলেও লাটে নিয়োগ৷ চলছে মামলা৷ ঝুলে রয়েছে ১৪ হাজার ৮৮ শূন্যপদ৷ অনিশ্চিত ৩০ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থীর ভাগ্য৷ একদিকে করোনার প্রভাব, অন্যদিকে মামলা, জোড়া ফলায় বিদ্ধ উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের বড় অংশ৷

দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ থমকে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে শুরু করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ বাড়িতে থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পোস্টার হাতে প্রতিবাদ করছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ তাদের দাবি, দ্রুত নিয়োগ করুন৷ হাতে লিখে অনেকেই বলছেন, ‘সাত বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা৷ আর পারছি না৷ এবার অন্তত নিয়োগ করে আমাদের মুক্তি দিন৷’ পোস্টারে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়ে চছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ অবিলম্বে চাকরি ব্যবস্থা করুক সরকার৷ মেয়ের হয়েও আর্জি জানিয়েছেন মা৷ শ’খানিক চাকরিপ্রার্থী এভাবে নিজেদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে একটাই আর্জি, ‘নিয়োগ করুন… নিয়োগ করুন… নিয়োগ করুন…’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × one =