দেশে কর্মহীন ৪ জনের মধ্যে ১ জন! লকডাউনে বেহাল দেশে কর্মসংস্থান

দেশে কর্মহীন ৪ জনের মধ্যে ১ জন! লকডাউনে বেহাল দেশে কর্মসংস্থান

dfe1f4265618e8526ceda9b297e52246

নয়াদিল্লি: করোনার প্রাদুর্ভাবে অর্থনীতির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র এত মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে যে বর্তমানে দেশের কর্মক্ষেত্র ভয়াবহ সংকটের সম্মুখীন। এই সংকট দেশের আরও বহু মানুষকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সিএমআইই (সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি)-র সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে এপ্রিল মাসে ভারতের বেকারত্বের হার বেড়েছে ২৩.৫ শতাংশ। বড় রাজ্যগুলির মধ্যে তামিলনাড়ু, ঝাড়খন্ড এবং বিহারে এপ্রিলে বেকারত্বের হার ছিল যথাক্রমে ৪৯.৮%, ৪৭.১%, এবং ৪৬.৬%। পাঞ্জাব, ছত্তিশগড় এবং তেলেঙ্গানায় সর্বনিম্ন হার ছিল ২.৯%, ৩.৪% এবং ৬.২%। সিএমআইই-র চাকরি সংক্রান্ত সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৩ মে পর্যন্ত চলতি সপ্তাহের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী  বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ২৭.১% কেটে গেছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

সিএমআইইয়ের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা প্রধান নির্বাহী মহেশ ব্যাস জানিয়েছেন যে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন আনুমানিক ১১৪ লাখ মানুষ। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০০ লাখ মানুষ কর্মক্ষেত্রে যুক্ত, সুতরাং ১১৪ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়লে হিসেব মতো কর্মক্ষেত্রে যুক্ত প্রতি চারজন ব্যক্তির মধ্যে একজন তাদের চাকরি হারিয়েছেন “। মঙ্গলবার তিনি তার পোস্টে উল্লেখ করেন যে ৩মে অবধি তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে আগামী দিনে এই বেকারত্বের হার আরও বাড়তে পারে।

মহেশ ব্যাস বলেন, কর্মসংস্থানের প্রথম সারির পরিস্থিতি অত্যন্ত মারাত্মক। তিনি বলেন, শ্রমে অংশগ্রহণের হার (অর্থনীতিতে সক্রিয় কর্মীদের একটি পরিমাপ) অত্যন্ত কম এবং এপ্রিলে এটি ছিল ৩৫.৬%। ব্যাস বলেন, লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে। বরং সেক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের একটা বড় অংশ নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাওয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্ত যোগ্য শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। সবদিক থেকেও কাজের ক্ষেত্রে সংকট বাড়ছে।

দেশের বিশিষ্ট পরিসংখ্যানবিদ প্রনব সেনের কথায়, গ্রামে্র দিকে কৃষিক্ষেত্রে এই কর্মসংস্থানের ঘাটতি কিছুটা কম হলেও কৃষিকাজে যুক্তদের আয় নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এদিকে শহরাঞ্চলে দারিদ্রতা বৃদ্ধি মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এর প্রভাব ভয়াবহ আকার নিতে চলেছে। 

গত মাসেই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা সতর্ক করেছিল যে ভারতে প্রায় ৯০% লোক অসংগঠিত ক্ষেত্রে  কাজ করে, প্রায় ৪০০ মিলিয়ন শ্রমিক সংকটের মুখে পড়লে দারিদ্র্যতা বৃদ্ধির ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।  ১৯৫ মিলিয়ন পূর্ণ সময়ের কর্মীদের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ২০২০র দ্বিতীয় শেষ ত্রৈমাসিকে বিশ্বব্যাপী ৬.৭% ঘন্টা কাজের সময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছিল তারা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *