hitech machines
দেরাদুন: ১০ দিনের মাথায় প্রথম দেখা মিলেছিল তাদের। কিন্তু আপাতত ১৩ দিন কেটে গেলেও উত্তরকাশীর সেই সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককে কবে উদ্ধার করা সম্ভব হবে তা অজানা। উদ্ধারকাজে বারবার বাধা সৃষ্টি হওয়ার কারণে সঠিক সময় মতো কাজ করতে পারছেন না উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। কিন্তু চেষ্টায় কোনও খামতি রাখছে না এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, বিআরও, আইটিবিপি। শ্রমিকদের প্রতি মুহূর্তের পরিস্থিতি জানতে এবং তাঁদের নিরাপদে বাইরে বের করে আনতে বিভিন্ন প্রযুক্তি এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। কী কী সেই যন্ত্রপাতি?
সুড়ঙ্গে অক্সিজেন, আলো কোনওটাই প্রাকৃতিক ভাবে ঢুকছে না, কৃত্রিম উপায়ে পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া শেষ কয়েকদিনে একাধিক খাবার, ওষুধ, খেলার সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে শ্রমিকদের মনোবল চাঙ্গা করতে। কিন্তু পরিবারের প্রশ্ন, এইভাবে আর কতদিন? এই বিষয়টি যে উদ্ধারকারী দল বা রাজ্যের প্রশাসনের মাথায় আসেনি এমনটা নয়, কিন্তু এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে তারা চেষ্টা ছাড়া কিছুই করতে পারেন না। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, শুক্রবার রাতের মধ্যেই সুড়ঙ্গের শ্রমিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে। কিন্তু তা হয়নি। ৫৭ মিটার ধস অতিক্রম করার কাজ করতে করতে ৪৬.৮ মিটার পর্যন্ত পথ অতিক্রম করেছিল খননের যন্ত্র। কিন্তু হঠাৎ ধাতব জিনিসে ধাক্কা খাওয়ায় ড্রিল মেশিন থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যদিও এখনও আশা, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ওই ৪১ জন শ্রমিক সুড়ঙ্গের বাইরে বেরতে পারবেন। কিন্তু অত্যাধুনিক একাধিক যন্ত্র ফেল করবে না। তাহলে দেখে নেওয়া যাক এমন কী কী যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে এই উদ্ধারকাজে যাদের ওপর সকলের ভরসা আছে।
এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরা – একটি পাইপের মধ্যে দিয়ে প্রথমবার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের দেখা গিয়েছিল, তা সম্ভব হয়েছিল এই ক্যামেরার জন্যই। সাধারণত চিকিৎসাক্ষেত্রে এই ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। মানুষের শরীরের ভিতরের কোনও অঙ্গের সমস্যা ধরতে এই ধরনের ক্যামেরা কাজে লাগে। তবে এবার তাকে সম্পূর্ণ অন্য কাজে লাগানো হল।
অগার যন্ত্র – এটি এক ধরনের ড্রিলিং মেশিন। ঘরের কাজের জন্য যে ড্রিল মেশিন ব্যবহার করা হয়, অগার হল সেই যন্ত্রের বড় রূপ। যন্ত্রের মধ্যে বড় বড় ধারালো মজবুত ব্লেড লাগানো থাকে। তার সাহায্যেই পাথর কাটা হয়। ব্লেডগুলির ওপরে লাগানো থাকে পাইপ। সেটিও তার সঙ্গে সঙ্গে গর্তের ভিতরে ঢুকতে থাকে। পাথর এবং কংক্রিটের স্তূপ সরিয়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে এই মেশিন দিয়ে।
আন্ডারওয়াটার কমিউনিকেশন সিস্টেম – সুড়ঙ্গের শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন উদ্ধারকারীরা। জলের নীচে যে ভাবে যোগাযোগ রাখা হয়, এক্ষেত্রেও একই পন্থা নেওয়া হয়েছে। আসলে ১০০ বা ১৫০ মিটার একটি তারের সঙ্গে হাইড্রোফোন জুড়ে দেওয়া হয়। তারপর সেটি সঙ্গে নিয়ে জলের নীচে নামেন ডুবুরিরা। তলায় কী ঘটছে, কী দেখা যাচ্ছে, তা এই ফোনের মাধ্যমে জলের ওপর থাকা কন্ট্রোল রুমকে সরাসরি জানাতে পারা যায়। সুড়ঙ্গের শ্রমিকদের সঙ্গে এইভাবেই যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
এছাড়া ডিআরডিওর রোবটকেও এই উদ্ধারকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের মূল কাজ, সুড়ঙ্গের ভিতরের অবস্থা পরিলক্ষিত করা। কোন জায়গায় ড্রিল করতে হবে, তা চিহ্নিত করা। পাশাপাশি সুড়ঙ্গের ভিতরের পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্ধারকারীদের তথ্য দেওয়া।