নয়াদিল্লি: করোনার জেরে কর্মহীন হয়ে পড়বেন বহু মানুষ, এই অনুমান আগেই করেছিলেন গবেষকরা। কর্মক্ষেত্রে নানা সমস্যার কারণে এবার চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য। আর ক্রমেই তা জটিল আকার নিচ্ছে। কী উপায় এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার? এবার সংগঠিত ও অসংগঠিত কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর অবনতি রুখতে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস), ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ও মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়াল ব্রিটিশ সেফটি কাউন্সিল।
গোটা বিশ্ব জুড়ে করোনা পরিস্থিতি। এই সঙ্কট রুখতে গোটা দেশ জুড়ে জারি ছিল লকডাউন। আর তার জেরে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে কর্মীদের মনে, তা মোকাবিলা না করলে সমস্যা আরও ভয়াবহ হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি এই বিষয়ে দিশা দেখিয়েছেন দিল্লি এইমস-এর সাইকিয়াট্রি বিভাগের অধ্যাপক রাজেশ সাগর, আইসিএমআর আমেদাবাদের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অকুপেশনাল হেলথ-এর ডিরেক্টর কমলেশ সরকার এবং ব্রিটিশ সেফটি কাউন্সিল-এর ভারতীয় শাখার তরফে সুরেশ তানওয়ার। তাঁরা কর্মীদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চাকরি খোওয়ানোর ভয় ছাড়াও বিভিন্ন অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের বহু কর্মীদের মনে।
এক্ষেত্রে সেই সমস্ত কর্মী ও তাঁরা যে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, উভয়কেই এগিয়ে আসতে হবে এই সমস্যা মোকাবিলার উদ্দেশ্যে। প্রয়োজনে সংস্থাগুলি তাদের কর্মীদের মানসিক অবস্থার সমাধানের জন্য মনোবিদদের সঙ্গে পর্যালোচনা করুক, এমনটাই মত চিকিৎসকদের। এই পরিস্থিতিতে কর্মীরা যেহেতু অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন, তাই সবার আগে তাঁদের নিশ্চয়তার পথ দেখানো প্রয়োজন। আইসিএমআর আমেদাবাদের তরফে কমলেশ সরকার এই বিষয়ে বলেন, 'ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রি সোসাইটির পরিসংখ্যান অনুসারে, মার্চের শেষ থেকে গোটা দেশে শতকরা ২০ জন মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছেন। সংস্থাগুলি এই বিষয়ে সক্রিয় না হলে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
চন্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (পিজিআই) সাইকিয়াট্রির অধ্যাপক দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, কাজ হারানো কোনও পরিযায়ী শ্রমিককে যোগা বা ডিপ ব্রিদিং করতে বললে তাঁদের মানসিক সমস্যার সমাধান হবে না। যোগা বা ডিপ ব্রিদিং অবশ্যই জরুরি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ওই শ্রমিককে যদি ত্রাণ বা রোজগারের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়, তবেই এই সমস্যার সমাধান মিলতে পারে।'