‘বিপজ্জনক’ যদি বলা হয়, তা হলে বয়সের সঙ্গে তার সাযুজ্য কমই। কেউ বিপদ ডেকে আনেন, কারও সামনে বিপদ হাজির হয়। পরিণতি একটিই, আত্মসমর্পণ। যে কোনও বয়সে, যে কোনও চেহারায় আসতে পারে ‘বিপদ’।
কিন্তু এত সবের পরেও ‘‘ইচ্ছে’’ বা আর একটু খুলে বললে ‘কামনা’, ‘যৌনচাহিদা’ অথবা ‘লিবিডো’-র মতো শব্দ ব্যবহার করা যায়, একটি বস্তু থাকে, যা অজান্তে, অগোচরে শরীরের ভিতর নাড়াচাড়া করতে থাকে হরমোন নিয়ে। কখনও সে হরমোনকে দ্রুত বেগে গোল্লাছুট করায়, কখনও স্তিমিত হতে হতে চিরতরে ঘুমিয়ে পড়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই চিরঘুমে যাওয়ার ঠিক আগে, অর্থাৎ, মাঝবয়সে দপ্ করে জ্বলে ওঠে ‘ইচ্ছে’।
আম-বাঙালি সংসারে জোয়াল ঠেলার কাজটা আজও নারীকুলের হাতেই রয়েছে। যতই সে অফিসে যাক, পেশায় দক্ষ হোক বা ড্রাইভিং-এ ধুন্ধুমার ফেলে দিক, কড়াইয়ে সর্ষের তেলে কাতলা মাছের টুকরো তাকেই ছাড়তে হয়। ঠিক এভাবেই কোন ফাঁক দিয়ে গলে যায় জীবনের সেরা সময়টা, ক’জন বাঙালি মহিলা তার হিসেব রাখতে পারেন?
খেয়াল করলে দেখা যাবে, এই ব্যস্ততার বয়সটা শুরু হয় ২০-২২ থেকে। চলে ৩০ পর্যন্ত। একদিকে সংসার, অন্যদিকে কেরিয়ার, টানাপড়েনটা সবথেকে বেশি থাকে এই সময়েই। ফলে বিছানায় স্বর্গীয় সুখ অনুভব করার সময়টাই থাকে না। উল্টে দেখা যায় বিবিধ ফাঁকফোকর, যা গলে সংসারে ঢুকে পড়তে পারে দূরত্ব নামক ব্যাধি।তুলনায় ৩১ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত যৌনজীবন অনেকটা সুখের হয়। দেখা গিয়েছে, এই বয়সের মধ্যে অন্তত ৮৭ শতাংশ মহিলা সক্রিয় যৌনজীবন বজায় রাখেন। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, এই সময়ে কেরিয়ার অনেকটাই স্থিতিশীল হয়ে ওঠে। সাংসারিক চাপও কমে যায় বেশ খানিকটা। সন্তানরা বেড়ে ওঠে ধীরে ধীরে। পড়াশোনা, কোচিং ক্লাস, বন্ধুবান্ধব মিলে তাদের নিজস্ব জগৎ তৈরি হয়ে যায়। অথচ, ঠিক এর আগের বয়ঃসীমা, অর্থাৎ ২২-৩০ পর্যন্ত ৮৫ শতাংশ মহিলা যৌনজীবনে সক্রিয় থাকেন। এর বাইরে রয়েছে হরমোনের কারুকাজ। শরীরে দাপিয়ে বেড়াতে থাকে ইসট্রোজেন। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছোটে লাগামছাড়া হয়ে। তার উপরে হাতে সময়, মনের উপরে চাপ কম। সব মিলিয়ে আসে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।