কলকাতা: করোনা প্যান্ডেমিকে স্কুল শিক্ষা সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর৷ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খোলার জন্য তৈরি হচ্ছে নয়া গাইডলাইন৷ কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সংকটে পড়তে হবে হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে৷ বিশেষ করে যাঁরা ভিন্ন জেলা কিংবা একই জেলার দূরবর্তী স্থানে কর্মরত রয়েছেন৷ এই অবস্থায় রাজ্যের সকল ইচ্ছুক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের ধাপে ধাপে নিজ জেলা বা নিকটবর্তী স্থানে বদলির আবেদন জানাল ‘অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’৷
কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এই বদলির আর্জি জানান ‘অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (APGTWA )’-এর সদস্যরা৷ তাঁরা জানান, এর আগে শিক্ষকদের বদলির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মতো iOSMS পোর্টালে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কনট্যাক্ট ডিটেলসে কর্মস্থল ও স্থায়ী ঠিকানা এন্ট্রি করাও হয়ে গিয়েছিল৷ তাঁদের আবেদন, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও সর্বোপরী সমাজের স্বার্থে তাঁদের বদলির বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হোক৷
ইতিমধ্যেই iOSMS পোর্টালে সকল তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে৷ ফলে এই তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত মিউচুয়াল ট্রান্সফারের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা৷ সেই সঙ্গে মিউচুয়াল ট্রান্সফার প্রক্রিয়া সরলীকরণ ও আধুনিকীকরণের দাবিও জানানো হয়েছে৷ ‘অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্যদের আর্জি, শিক্ষকদের পোস্ট, বিষয় ও জেলা ভিত্তিক তথ্য প্রকাশ করে শীঘ্রই অনলাইন ট্রান্সফার প্রক্রিয়া শুরু করুক রাজ্যের শিক্ষা দফতর৷ অবিলম্বে শূন্য পদে জেনারেল ট্রান্সফার চালু করতে হবে৷ তাঁদের দাবি, সাধারণ বদলির ক্ষেত্রে বয়স এবং দূরত্বকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে এবং স্পেশ্যাল বদলির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রেখে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলির সুযোগ দিতে হবে৷
এছাড়াও যে সকল শিক্ষকদের মিউচুয়াল এবং স্পেশ্যাল ট্রান্সফার আটকে রয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে অবিলম্বে তা শুরু করার আর্জিও জানানো হয়েছে৷ পাশাপাশি তাঁদের দাবি, নবনিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী, যাঁরা এখনও কনফার্মেশন পাননি, অবিলম্বে তাঁদের কনফার্মেশন প্রক্রিয়া চালু করে বদলির সুযোগ দিতে হবে৷ অনেকে আবার ট্রান্সফার লেটার হাতে পেয়েও স্কুলে ফাঁকা পদ না থাকায় কাজে যোগ দিতে পারছেন না৷ সেক্ষেত্রে শিক্ষা দফতরকে শূন্য পদের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে বলেও আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা৷
সাধারণ বা এইচএস বিভাগে কর্মরত স্নাতক বা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের বদলের ক্ষেত্রে শূন্যপদ ও পোস্ট যেন বাধা সৃষ্টি না করে, সেই দিকেও নজর দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে৷ তাঁদের মতে, অবিলম্বে স্কুল সার্ভিস কমিশনের সমস্ত রিজিয়ন অফিসের মাধ্যমে বদলির কাজ শুরু করা উচিত৷ এছাড়াও চাকরিজীবনে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের আবেদন কমপক্ষে দু’বার ও তিনজনের মধ্যে এই সুবিধা চালু করার দাবিও জানানো হয়েছে৷ যে সকল শিক্ষিকার সন্তান রয়েছে তাঁদের বদলির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে ‘অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’৷