tmc
নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশ জুড়ে বিজেপির জয়জয়কার। বহু রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। এবার মধ্যপ্রদেশ ধরে রাখার পাশাপাশি বিজেপি ক্ষমতায় এল রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ে। বলা যায় হিন্দি বলয়ের প্রায় সবটা জুড়ে শুধু বিজেপি আর বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে একটা প্রশ্ন উঠছে। দেশ জুড়ে বিজেপির যত বাড়বাড়ন্ত হবে তাতে পশ্চিমবঙ্গে কী তৃণমূল বিশেষ সুবিধা পাবে? কিন্তু কেন এই প্রশ্ন উঠছে? সেখানে আদৌ কী কোনও বাস্তবতা রয়েছে?
ঘটনা হল পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক নির্বাচনে জয়লাভের ক্ষেত্রে তৃণমূলের মূল ভরসা সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১২৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট জয়পরাজয়ে বড় ভূমিকা নেয়। আর এ কথা সবাই জানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটের প্রায় পুরোটাই বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে একতরফা ভাবে তৃণমূলের দিকে আসছে। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের দিকে সংখ্যালঘু ভোটের একটা অংশ চলে যাওয়ায় চিন্তা বাড়ে তৃণমূলের। কিন্তু বিজেপি যেভাবে বিপুলভাবে জয় পেল তিনটি রাজ্যে, তাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট পুরোপুরি যে আবার তৃণমূলমুখী হবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ একটাই, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বুঝে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে হারাতে পারবে একমাত্র তৃণমূল।
রবিবারের ফল প্রকাশের পর তৃণমূল একই প্রচার করছে। তৃণমূলের দাবি এই জয়ে বিজেপির কোনও কৃতিত্ব নেই, কংগ্রেসের ব্যর্থতাতেই তারা জয়লাভ করেছে। সেই সঙ্গে তৃণমূল নতুন করে প্রচার করবে যে, কেন্দ্রে বিজেপি আবার ক্ষমতায় এলে সিএএ এবং এনআরসি লাগু হবে। যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ প্রবল অসুবিধার মধ্যে পড়বেন। তাঁদের ভিটেমাটি ছাড়া হতে পারে। কিছুদিন আগেই কলকাতায় এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সিএএ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তাই শুধুমাত্র বিজেপিকে রোখার জন্য লোকসভা নির্বাচনে শুধুমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট নয়, যারা বিজেপির কট্টর বিরোধী তারা নিঃসন্দেহে তৃণমূলকেই বেছে নেবেন।
এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছে লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরোধী জোটের মুখ, অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করলে তবেই নরেন্দ্র মোদিকে হারানো সম্ভব হবে। তখন বিজেপি বিরোধী ভোটের সিংহভাগ যে তৃণমূলের দিকেই আসবে তা স্পষ্ট। সেক্ষেত্রে তৃণমূল লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে ল্যান্ডস্লাইড জয় পেতে পারে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। আর চার রাজ্যেই যদি কংগ্রেস ক্ষমতায় আসত তাহলে হয়ত বিজেপি বিরোধিতার ক্ষেত্রে ততটা উদগ্রীব হতেন না বাংলার বিজেপি বিরোধী মানুষজন। সেই জায়গা থেকে বিজেপি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যত এগোবে ততই পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সুবিধা হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ৬ ডিসেম্বর ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠক ডেকেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। সেখানে তৃণমূলের তরফে কি বলা হবে তা নিয়ে এখন থেকেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে।